প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে শোক প্রস্তাবে বক্তব্য দেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় অধিবেশন শুরু হয়। পরে চলতি সংসদের ঝিনাইদহ-১ আসনের সদস্য আবদুল হাইয়ের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে অধিবেশন মুলতবি করা হয়। ৯ মে পর্যন্ত এই অধিবেশন চলবে।
শুরুতেই চলতি অধিবেশনের জন্য সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের মনোনয়ন দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। এবারের অধিবেশনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম এ মান্নান, আসাদুজ্জামান নূর, শফিকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া ও সংরক্ষিত আসনের ফজিলাতুন নেসা। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে তালিকার ক্রমানুসারে সংসদ পরিচালনা করবেন।
ঝিনাইদহ-১ আসনের সদস্য আবদুল হাইয়ের মৃত্যুতে দোয়া মোনাজাতে অংশ নেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল হাইয়ের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে জাতীয় সংসদ। শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে তা গ্রহণ করা হয়।
শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের প্রথম দিনই শোক প্রস্তাব আনতে হলো। আবদুল হাই ঝিনাইদহের মতো একটি প্রতিকূল জায়গায় বারবার নির্বাচিত হয়ে সংসদে এসেছেন। তাঁর চিকিৎসার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তিনি চলে গেলেন।
ছাত্রজীবন থেকেই আবদুল হাই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন জানিয়ে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ৬ দফা আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি আন্দোলনে তাঁর অবদান রয়েছে। মানুষের সমর্থন তাঁর প্রতি ছিল। এলাকার সার্বিক উন্নয়নে তিনি খুবই আন্তরিক ছিলেন। আবদুল হাই অত্যন্ত সাহসী ছিলেন। সংগঠক ছিলেন।
ঝিনাইদহের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি নিজেও সেই এলাকা ঘুরে দেখেছি। গ্রামের মানুষ টিকতে পারত না। সব সময় অস্ত্রের ঝনঝনানি। বিএনপি নামে যে দলটি সৃষ্টি হয়েছিল তারা... এই আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টির বেশির ভাগই আবার বিএনপিই করত। সেখানে প্রতিনিয়ত আমাদের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা হতো। সেখানে আমরা বিভিন্ন সময় টিম পাঠাতাম। তারাও অনেক সময় হামলার শিকার হতো। আমি নিজেও হামলার শিকার হয়েছি।’
জাতীয় সংসদ ভবন | ফাইল ছবি |
শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অন্যদের মধ্যে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম, সরকারি দলের সংসদ সদস্য আবদুর রাজ্জাক, এস এম কামাল হোসেন, মো: তৌফিকুজ্জামান, কাজী নাবিল আহমেদ, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বক্তব্য দেন।
আবদুল হাই ছাড়া সংসদে সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া, আবুল হাসেম খান, পিনু খান, নজির হোসেন ও মোখলেসুর রহমান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম হেলাল, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার শিব নারায়ণ দাশ, সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম আবদুর রহিমের স্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও হুইপ ইকবালুর রহিমের মা নাজমা রহিম, রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ, চাইম ব্যান্ডের ভোকালিস্ট খালিদ, গজলের প্রবাদপ্রতিম পঙ্কজ উদাস, টংক আন্দোলনের নেত্রী কুমুদিনী হাজং ও প্রখ্যাত অভিনেতা আহমেদ রেজা সেলিমের মৃত্যুতে শোক জানায় জাতীয় সংসদ। মস্কোর ক্রোকাস সিটিতে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহত, গাজা উপত্যকায় আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হতাহত এবং দেশ–বিদেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের স্মরণে শোক জানিয়েছে সংসদ।