নাটোর জেলার মানচিত্র |
প্রতিনিধি নাটোর: নাটোরে প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়ের আগেই আম-লিচু পাড়া শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাজারে পাকা আম বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। স্বল্প খরচে আম ও লিচু পরিবহনের জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নাটোরসহ কিছু স্টেশন থেকে ‘ম্যাংগো ট্রেন’ চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সভায় জেলার আম ও লিচু পাড়ার দিন ঠিক করা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০ মে থেকে মোজাফফর লিচু, ২৭ মে থেকে বোম্বাই ও চায়না লিচু পাড়ার দিন নির্ধারণ করা হয়। একই সভায় ১৫ মে থেকে গুটি আম, ২৫ মে থেকে রানিপছন্দ এবং ৩০ মে থেকে ক্ষীরশাপাতি আম পাড়ার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
সভায় জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঞা, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (উদ্যান) শামসুর নাহার ভূঞা, কৃষি কর্মকর্তা নীলিমা জাহানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঞা বলেন, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এবার আম, লিচুসহ গ্রীষ্মকালীন ফল দেরিতে এসেছে। এর মধ্যেই কোন ফল কখন গাছ থেকে পেড়ে বাজারজাত করা হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনা সব ফলচাষি ও ব্যবসায়ীকে মানতে হবে। অন্যথায় তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, কিছু কিছু চাষি অপরিপক্ব আম ও লিচু পাড়তে শুরু করেছেন। বাজারেও এসব ফল বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার সকালে লালপুর উপজেলার আব্দুলপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আব্দুলপুর-বাগাতিপাড়া সড়কের পাশে কামাল হোসেন নামের এক চাষি তাঁর গাছের লিচু পাড়ছেন। এত আগে লিচু পাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতিরিক্ত খরার কারণে লিচুর গুটি বড় হয়নি, রং ভালো হয়নি। কিন্তু লিচু ফেটে যাচ্ছে। পাখি কাঁচা ফলই খেয়ে ফেলছে। তাই তিনি লিচু পাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। তিনি ১০০টি লিচু ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
গতকাল সন্ধ্যার পর নাটোর স্টেশন এলাকায় পাকা আম খুচরা বিক্রি করতে দেখা যায়। ফল বিক্রেতা কামাল হোসেন জানালেন, এসব আম সাতক্ষীরা থেকে আনা হয়েছে। তবে অধিকাংশ আম পচে যাচ্ছে।
এ ছাড়া স্টেশনবাজার, নিচাবাজার ও জেলার অন্য হাটবাজারেও আম-লিচু বিক্রি হচ্ছে। নামমাত্র খরচে আম ও লিচু পরিবহনের জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নাটোরসহ কিছু স্টেশন থেকে ‘ম্যাংগো ট্রেন’ চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রতি কেজি ফল এখান থেকে ঢাকা পাঠাতে খরচ পড়বে ১ টাকা ৪৩ পয়সা।
জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঞা বলেন, ফল আহরণের নির্ধারিত সময় মানলে কৃষকেরাই লাভবান হবেন। ক্রেতারাও মানসম্মত ফল খেতে পারবেন। কৃষি বিভাগ ও পুলিশ বেঁধে দেওয়া সময় মানা হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করছেন। পর্যবেক্ষণে যদি অনিয়ম ধরা পড়ে, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।