রাজশাহীতে প্রথমবারের মতো পালিত হলো বিশ্ব মৌমাছি দিবস। সোমবার বিকেলে রাজশাহী নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি রাজশাহী: অতিথিদের উপহার হিসেবে একটি করে লকেট দেওয়া হলো, যার মাঝখানে একটি মরা মৌমাছি মমি করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া পাঁচটি মৌমাছির ছবি বাঁধাই করে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়।
গবেষকেরা বলেন, মৌমাছি ছাড়া মানুষ চার বছরের বেশি বাঁচতে পারবে না। তাই এবার বিশ্ব মৌমাছি দিবসের প্রতিপাদ্য করা হয়েছে—‘বি অ্যানগেজড ইউথ ইয়ুথ’।
রাজশাহীতে মৌয়াল, চাষি, বণিক, গবেষক ও ভোক্তার জাতীয় জোট সোমবার দিবসটি পালনের আয়োজন করে। রাজশাহী নগরের অলকার মোড়ে একটি রেস্তোরাঁয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মাহতাব আলী।
প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. ওমর আলী, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোছা. কোহিনুর খাতুন, রাজশাহীর অ্যান্টিটেররিজম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. এনায়েত কবির সরকার, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, স্বেচ্চাসেবী মধু গবেষক ও উদ্যোক্তা আলওয়ান মধুজাদুঘর ও গবেষণাকেন্দ্রের উদ্যোক্তা সৈয়দ মোহাম্মদ মইনুল আনোয়ার (ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দেন), উদ্যোক্তা মো. হাবিবুর রহমান, নেচারাল ফুডস প্রোডাক্ট ময়না ভাই ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা হাফিজুর রহমান, সাংবাদিক গোলাম রাব্বানি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ব মৌমাছি দিবস-২০২৪ রাজশাহীর আহ্বায়ক আকমল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে মৌমাছি ও মধু কর্মযজ্ঞের সক্রিয় সব অংশীদার-মৌয়াল, চাষি, বণিক, গবেষক ও ভোক্তাদের একই ময়দানে একীভূত হয়ে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টির দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে প্রতিষ্ঠিত মৌমাছি ও মধু জোটের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।’ তিনি উপস্থিত অতিথিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
বাংলাদেশ সুগার ক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, মৌমাছি পরাগায়নে ৮৫ শতাংশ ভূমিকা পালন করে। যদি ক্রমাগত চার বছরে মৌমাছি পরাগায়ন না করে তাহলে মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। অর্থাৎ মৌমাছি না থাকলে মানুষ চার বছরের বেশি টিকতে পারবে না।
অনুষ্ঠানে বক্তারা মৌমাছির ভূমিকা নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেন। সেই সঙ্গে মৌমাছির যত্ন নেওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁরা বলেন, ফুল না থাকার কারণে বছরের সাড়ে পাঁচ মাস মৌমাছিরা খাবারের সংকটে পড়ে। এ সময় উদ্যোক্তরা মাছির পরিচর্যা করেন। তাঁরা আরও বলেন, এ অনুষ্ঠান ঘরোয়া হলেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। আগামী বছর নিশ্চয় এ অনুষ্ঠান বড় পরিসরে হবে। বক্তারা মৌমাছির কাছ থেকে শুধু মধু আহরণ না করে আরও উপজাত দ্রব্য প্রস্তুত করার আহ্বান জানান।