রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেন্দ্রের বাইরে সংঘর্ষের ঘটনায় ১৪ জনকে আটক করেছে র্যাব ও পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার গোপালপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি রাজশাহী: রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণকালে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আটজন। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার গোপালপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরুর আগেই কেন্দ্রের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে একই উপজেলার পানানগর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে আরেকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন একজন। এসব ঘটনায় পুলিশ ও র্যাব ১৪ জনকে আটক করেছে। এ ছাড়া নান্দিগ্রাম দারুস সালাম আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটারদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে নবীর উদ্দিন (৪২) নামের একজনকে আটক করা হয়েছে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন গোপালপুর গ্রামের মো. আজের, আজাদ, শহিদুল ইসলাম, শুকচান, মিঠু, আবদুর রাজ্জাক ও সান্টু এবং পানানগর গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে শিহাব। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলার গোপালপুর উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে ভোটারদের ভোটের স্লিপ দেওয়ার জন্য পাশাপাশি বসেছিলেন দুর্গাপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী শরিফুজ্জামান শরিফ (মোটরসাইকেল প্রতীক) এবং আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মজিদ সরদারের (ঘোড়া) সমর্থকেরা। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে তর্কবিতর্ক থেকে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে তা থেকে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘোড়া প্রতীক ও মোটরসাইকেল প্রতীক–সমর্থিত অন্তত আটজন আহত হন। ঘটনা ভোট শুরুর আগে হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দুপুর ১২টার পর গিয়ে ১৪ জনকে আটক করে। এ ছাড়া নান্দিগ্রাম দারুস সালাম আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটারদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে নবীর উদ্দিনকে আটক করা হয়েছে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক। তিনি এই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় হাতুড়ি ও চাপাতি দিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। আবদুর রাজ্জাক বলেন, তিনি ভোট দিতে যাচ্ছিলেন। তখন পেছন থেকে এসে ঘোড়া প্রতীকের সমর্থকেরা ধাক্কা দেন। পরে বাঁশ দিয়ে পেটানো হয়।
ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে দুপুরের দিকে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান, র্যাব-৫–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. রফিকুল আলম ও গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সোহেল রানা যান। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন। সেখানে দুপুরে অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে আটক করা হয়। পরে তাঁদের থানায় নেওয়া হয়।
র্যাব-৫–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, দুর্গাপুরে একটি ঘটনা ঘটেছিল। এখান থেকে সন্দেহভাজনদের আটক করা হয়েছে। তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তৎপর আছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল আলম বলেন, গোপালপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশে একটি ঘটনা ঘটেছিল। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকেরা কেন্দ্র দখল করতে যান। সেখানে তাঁর সমর্থকেরা বাধা দিলে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে তাঁর বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
উল্টো অভিযোগ করে মোটরসাইকেলের প্রার্থী শরিফুজ্জামান শরীফ বলেন, কেন্দ্রের বাইরে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকেরা কেন্দ্রে ভোট দিতে যেতে বাধা দেন। পরে মারামারি হয়। এতে তাঁর কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন।