রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে তৈরি হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ‘স্মৃতি উদ্যান’

বৃক্ষরোপণ করছে রসাটম প্রকৌশল বিভাগে নিয়োজিত ব্যক্তি ও স্বেচ্ছাসেবকরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মদানকারী রুশ ও বাঙালি সৈনিকদের স্মৃতি স্মরণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আবাসিক এলাকায় গাছ লাগিয়ে ‘স্মৃতি উদ্যান’ তৈরি হচ্ছে।

পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আবাসিক এলাকা গ্রিন সিটিতে রোসাটম প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে সম্প্রতি গাছ লাগানো হয়; কর্মসূচির নাম দেওয়া হয় ‘স্মৃতি উদ্যান’।

রাশিয়ান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকারী রোসাটমের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোসাটম প্রকৌশল বিভাগের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা গ্রিন সিটি এলাকায় ২৮টি ফার গাছের চারা রোপণ করেছেন।বাংলাদেশ এবং হাঙ্গেরিতে প্রথমবারের মতো এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হল। রোসাটম প্রকৌশল বিভাগ যেসব দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে, সেখানে নিয়মিতভাবে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

এ প্রসঙ্গে এতমস্ত্রয়এক্সপোর্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং রূপপুর এনপিপি নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক আলেক্সি দেইরী বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারীদের আমরা এই অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। এই বৃক্ষগুলো শুধু আমাদের পূর্বপূরুষদের বীরোচিত কাজকেই স্মরণ করিয়ে দেবে না, একই সঙ্গে পরিবেশের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে। পরিবেশ সুরক্ষার ব্যাপারে রোসাটম সব সময়ই যত্নশীল। তাই আমরা বিভিন্ন পরিবেশ উদ্যোগের সঙ্গে নিয়মিতভাবে সহযোগিতা করে আসছি।

বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া স্বেচ্ছাসেবকরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী যোদ্ধাদের স্মৃতিকে স্মরণ করতে আয়োজিত এই উদ্যোগে সহায়তা করছে রুশ প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ফেডারেল বন এজেন্সি।

এই উদ্যোগের অধীনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শহীদদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্যে একটি করে মোট দুই কোটি ৭০ লাখ গাছের চারা রোপণ করা হবে। প্রত্যেক শহীদের সবুজ স্মৃতিফলক হিসেবে প্রতিটি গাছকে বিবেচনা করা হচ্ছে।

এই উদ্যোগের আরেকটি অন্যতম লক্ষ্য হলো, বন সম্পদের রক্ষা এবং পুনরুদ্ধার, যা বিশ্বে কার্বন নিঃসরণ কমাতে সহায়তা করবে। রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়,  রাশিয়া বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়া বাংলাদেশের পক্ষে জোরালো ভূমিকা রেখেছিল। এজন্য বাংলাদেশ রাশিয়ার প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ সৃষ্টির সময় থেকে রাশিয়া এ দেশের অকৃত্রিম বন্ধু। ১৯৭১ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তা না পেলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন কঠিন হতো। 

স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সোভিয়েত নাবিকরা চট্রগ্রাম বন্দরে মাইন অপসারণে কাজ করেছেন এবং বিধ্বস্ত জাহাজগুলোকে পানির নীচ থেকে উদ্ধার করেন। এটি ছিল বিদেশে পরিচালিত সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন, যা খুব কমই আলোচিত হয়।

পরিবেশ নির্মল রাখতে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধে বৃক্ষরোপণ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন