পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কৃর্তপক্ষের ওপর চাপ তৈরি করতে জার্মানির মিউনিখ বিমানবন্দরের একটি রানওয়েতে জড়ো হয়ে আজ শনিবার ভোরে বিক্ষোভ করেছেন জলবায়ুকর্মীরা। এর কারণে ৬১টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে আরও অনেক ফ্লাইট। পরে পুলিশ সেখান থেকে আটজনকে গ্রেপ্তার করে।
মিউনিখ বিমানবন্দরের একজন মুখপাত্র জানান, আজ ভোরে ‘লাস্ট জেনারেশন’ নামের জলবায়ুবিষয়ক এক সংগঠনের কর্মীরা দেশটির দ্বিতীয় ব্যস্ততম এই বিমানবন্দরের বেড়া কেটে রানওয়েতে ঢুকে পড়েন। এরপর তাঁরা সেখানে নিজেদের আঠা দিয়ে রানওয়ের সঙ্গে আটকে ফেলেন। ফলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে উড্ডয়ন ও অবতরণের উল্লিখিত ফ্লাইটগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ স্থানীয় সরকারি সম্প্রচারমাধ্যমকে জানায়, এ ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে অচলাবস্থার অবসান ঘটে। স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ২০ মিনিটের দিকে বিমানবন্দরের দুটি রানওয়েই চালু করা সম্ভব হয়। দেশটিতে একটি লম্বা ছুটি শুরু হতে যাচ্ছে। তাই আজ পর্যটকদের ছিল একটি ব্যস্ততম দিন।
জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করতে নানা নজরকাড়া কর্মসূচি দিয়ে ইতিমধ্যে আলোচিত হয়েছে লাস্ট জেনারেশন। এর আগে তাঁরা নিজেদের বিভিন্ন সড়কে আঠা দিয়ে আটকে রেখে বিক্ষোভ করেছেন। ফরাসি চিত্রশিল্পী ক্লদ মনের চিত্রকর্মে আলু ভর্তা নিক্ষেপ করেছেন। তবে তাঁদের কর্মকাণ্ড নিয়ে মানুষের মধ্য মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষও তাঁদের প্রতি কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
জার্মানির পরিবহনমন্ত্রী ফলকার ভিসিং লাস্ট জেনারেশনের কর্মসূচির সমালোচনা করে বলেছেন, এ বিক্ষোভ ন্যায্য ছিল না। বরং বিমান চলাচলকে বিঘ্নিত করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটা করা হয়েছে। চলমান আইনে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে লাস্ট জেনারেশন জনগণকে বিমানে চড়তে নিরুৎসাহিত করার বিষয়ে যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়ায় সরকারের সমালোচনা করেছে। তাদের ভাষ্য, উড়োজাহাজ চলাচল পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কার্বন ডাই–অক্সাইড নিঃসরণের বড় উৎস।
ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই পরিবেশবাদীদের দাবি, ২০৩০ সালের মধ্যে জার্মান সরকারকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ঠেকাতে ও সব ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ করতে আরও জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ছাড়া মহাসড়কে গাড়ির গতিসীমা আরও কমিয়ে আনার দাবিও রয়েছে। বিমানবন্দরে অবস্থান নেওয়ার এমন কর্মসূচিকে অপরাধ হিসেবে দেখছে দেশটির সরকার।
২০২২ সালের ডিসেম্বরেও লাস্ট জেনারেশনের কর্মীরা মিউনিখ বিমানবন্দরের একটি রানওয়েতে নিজেদের আঠা দিয়ে আটকে রেখেছিলেন। তবে সেবার ফ্লাইট চলাচলে তেমন একটা বিঘ্ন ঘটেনি।