কূটনৈতিক প্রতিবেদক: র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ওপর নিষেধাজ্ঞা ও বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসা নীতি ঢাকা-ওয়াশিংটনের সম্পর্কে প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর আসন্ন ঢাকা সফরে র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা নীতি তুলে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আজ সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

দুই দেশের সম্পর্কের অস্বস্তির বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট চিঠি লিখে সম্পর্ক এগিয়ে যাওয়ার বা নতুন উচ্চতায় নেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। মার্কিন প্রশাসন থেকে যারাই বাংলাদেশে সফর করুক না কেন, আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করব। সেখানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আছে, আমাদের নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা আছে।

লুর সফরে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা নীতি তুলে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা নিয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেগুলো (র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা নীতি) আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিছুটা রেখাপাত করেছে তো বটেই। সেগুলো নিয়ে অবশ্যই আমরা আলোচনা করব।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সেগুলো (র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি) যাতে সহজীকরণ হয় বা উঠে যায়, সেগুলো নিয়ে মার্কিন প্রশাসনে এর আগে হোয়াইট হাউস ও পররাষ্ট্র দপ্তরে আলোচনা করেছি। সেই প্রসঙ্গগুলো স্বাভাবিকভাবে আসতেই পারে। আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে উভয় দেশ কাজ করছি।’

দুই দিনের সফরে কাল মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু। ঢাকা সফরের সময় তিনি পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এর পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। উগান্ডায় মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার বৈঠকও হয়েছে। সেখানে তাঁকে দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। মন্ত্রী এ বিষয়ে সদিচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আর এটি সত্য যে আরাকানে এখন যে পরিস্থিতি, তা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অন্তরায় তৈরি করেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে গত ৬০–৭০ বছরের ইতিহাস টানলে দেখা যাবে সব সময়ে গন্ডগোল লেগেছে। প্রত্যাবাসন শুরু করার ক্ষেত্রে এটিকে অজুহাত হিসেবে যাতে দাঁড় করানো না হয়।

বিএনপির ভারতের পণ্য বর্জনের রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন করলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির এই ডাক মুখ থুবড়ে পড়েছে। যে দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কয়েক হাজার কিলোমিটারের সীমান্ত। সেই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না রেখে আমাদের উন্নয়ন কখনো সম্ভব নয়। শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখাও সম্ভব নয়।