বগুড়াতে এসি ল্যান্ডের বিরুদ্ধে মধ্যরাতে ‘পিকনিকের’ খিচুড়িতে আবর্জনা ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ

মধ্যরাতে খিচুড়ির পাতিলে আবর্জনা ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ | ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি বগুড়া: গ্রামের মধ্যে মধ্যরাতে চলছিল খিচুড়ি রান্না। রান্নার শেষ পর্যায়ে সেখানে হাজির হন বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন। তাঁর নির্দেশে রান্না করা খাবারের মধ্যে ঢেলে দেওয়া হয় আবর্জনা।

অভিযোগ উঠেছে, এসি ল্যান্ড ফিরোজ হোসেনের নির্দেশে তাঁর গাড়ির চালক হযরত আলী খিচুড়ির মধ্যে ছাগলের বিষ্ঠাসহ আবর্জনা ছিটিয়ে দেন। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার  দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেশরতা গ্রামে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আদমদীঘিতে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে ২১ মে। নির্বাচন উপলক্ষে এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন। গতকাল রাতে সদর ইউনিয়নের কেশরতা গ্রামের শ খানেক নারী-পুরুষ মিলে রান্না করছিলেন। এসি ল্যান্ড ফিরোজ হোসেন পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অনেক লোকজন দেখে গাড়ি থামিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে গাড়ির চালককে রাস্তার আবর্জনা উঠিয়ে খিচুড়ির পাতিলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। চালক সঙ্গে সঙ্গে রান্না করা খাবারের মধ্যে আবর্জনা ছিটিয়ে দেন।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ কয়েকজন বলেন, কোনো অন্যায় করে থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু রান্না করা খাবারের মধ্যে আবর্জনা দেওয়া মোটেও কাম্য নয়।

ওই গ্রামের মকলেছুর রহমান বলেন, এক পোয়া চাল আর ৫০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে আমরা পিকনিকের আয়োজন করি। খিচুড়ি রান্নার শেষ পর্যায়ে হঠাৎ এসি ল্যান্ড এসে আমাদের জিজ্ঞেস করেন, কোনো প্রার্থী আমাদের খাওয়াচ্ছে কি না। আমরা পিকনিকের চাঁদার তালিকা তাঁকে দেখাই। এরপরও তাঁর নির্দেশে প্রথমে জ্বলন্ত চুলাতে পানি ঢেলে দেওয়া হয়। এরপর রান্না করা খিচুড়ির পাতিলের মধ্যে ছাগলের বিষ্ঠাসহ ময়লা-আবর্জনা ছিটিয়ে দেন এসি ল্যান্ডের চালক।

মকলেছুর ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘একজনের খাবার কীভাবে নষ্ট করে, তা আমি আমার জীবনে দেখিনি! এটা খুব অমানবিক কাজ করেছেন তিনি।’

একই কথা বলেন গ্রামের বাসিন্দা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘আমরা চাঁদা তুলে পিকনিকের আয়োজন করে রান্না করছিলাম। কিন্তু খাবারের মধ্যে ময়লা-আবর্জনা দিয়েছে। আমাদের সারা রাত না খেয়ে থাকতে হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি।’

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোনকল ও এসএমএম পাঠালেও সাড়া দেননি সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন।

মোবাইল ফোনে ঘটনাটি জানালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘নির্বাচন শেষ হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’