কাজলরেখা দিয়ে প্রথমবারের মতো বড় পর্দায় যাত্রাটা স্মরণীয় করে রাখলেন সাদিয়া আয়মান | ছবি: অভিনেত্রীর সৌজন্যে |
বিনোদন প্রতিবেদক: ‘সাদিয়া আয়মান এতটাই ভালো যে আমি তাকে সেকেন্ড হাফে অনেক মিস করেছি’—‘কাজলরেখা’ সিনেমায় তরুণ অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মানকে দেখে মুগ্ধতার কথা লিখেছেন সুবর্ণা মুস্তাফা।
পবিত্র ঈদুল ফিতরে মুক্তিপ্রাপ্ত গিয়াস উদ্দিন সেলিমের এই সিনেমায় কিশোরী কাজলরেখা চরিত্রকে প্রাণ দিয়েছেন সাদিয়া। মিথিলা, ইরেশ যাকেরের মতো তারকাদের মধ্যে আলাদাভাবে নজর কেড়েছেন তিনি। এর আগে ওয়েব সিনেমা ‘মায়াশালিক’-এ মায়া ছড়িয়েছিলেন সাদিয়া, কাজলরেখা দিয়ে প্রথমবারের মতো বড় পর্দায় যাত্রাটা স্মরণীয় করে রাখলেন টিভি নাটকের এই জনপ্রিয় মুখ।
এতে সাবলীল অভিনয়ে দর্শকদের পাশাপাশি শিল্পী, নির্মাতাদের প্রশংসা পাচ্ছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সুবর্ণা মুস্তাফার মতো এত বড় শিল্পীর প্রশংসা পাওয়া জীবনের স্মরণীয় প্রাপ্তি, পুরস্কারের মতো। এই সম্মান পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করছি।’
অভিনয়ের গুণে তানভীন সুইটি, চয়নিকা চৌধুরী, রুনা খানের মতো জ্যেষ্ঠ শিল্পীর প্রশংসা পেয়েছেন সাদিয়া। ফোন করে শুভাশীষ জানিয়েছেন তাঁরা। ‘তাঁদের ভালোবাসা আমাকে অনুপ্রাণিত করে। পরের কাজে এই ভালো লাগা ও সম্মানটা যেন ধরে রাখতে পারি, সেই চেষ্টা করব,’ বলেন সাদিয়া।
‘কাজলরেখা’র অভিজ্ঞতা
হালের টিভি নাটকের জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের একজন সাদিয়া; ঈদে তখন যখনসহ বেশ কয়েকটি আলোচিত নাটকে দেখা গেছে তাঁকে। তবে কাজলরেখা সিনেমায় নাম লেখানোর সময় সাদিয়াকে সেভাবে কেউই চিনতেন না, তারকাখ্যাতি তো ছিলই না। ফলে প্রত্যাশার চাপও ছিল না।
সাদিয়ার ভাষ্যে, ‘তখন কেউই আমাকে চিনতেন না। অভিনয়ের জন্য চাপ অনুভব করি না। কোনো চরিত্রকে যতটা অকৃত্রিমভাবে তুলে ধরা যায়, সেই চেষ্টা করি। বাড়তি কোনো চাপ নিই না। তবে এত বড় বড় আর্টিস্ট, ডিরেক্টরের সঙ্গে কাজ করছি, সেটা নিয়ে একটু চিন্তা ছিল। তবে আমি আমার মতো করে কাজ করে গেছি। সেলিম ভাই, খসরু ভাই খুবই সহযোগিতা করেছেন।’
এর আগে ওয়েব সিনেমা ‘মায়াশালিক’ বড় পর্দায় দেখেছেন সাদিয়া। তবে ছবিটি বড় পর্দার ছিল না, বড় পর্দার প্রথম ছবি হিসেবে ‘কাজলরেখা’ দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর। ছবিটি দুবার দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার অংশটুকু দম বন্ধ করে দেখেছি। আমার এন্ট্রি সিন, সংলাপ, গানের অংশগুলোতে মনে হলো, নতুন করে নিজেকে দেখেছি। আমাদের নিজেদের ভালোবাসতে হয়। কিছু কিছু জায়গায় নিজেকে দেখে খুব মুগ্ধ হয়েছি।’
সিনেমায় যুক্ত হলেন কীভাবে—এমন প্রশ্নের জবাবে সাদিয়া জানালেন, হঠাৎ ‘কাজলরেখা’ টিম থেকে ফোন পান তিনি। পরে লুক টেস্টে উত্তীর্ণ হওয়ার পর কাজলরেখা চরিত্রের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে তাঁকে।
প্রায় ৪০০ বছর আগের বাংলার লোককাহিনি মৈমনসিংহ গীতিকার ‘কাজলরেখা’ অবলম্বনে ছবিটি নির্মাণ করেছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম। এই সিনেমায় কাজলরেখার বড়বেলার চরিত্রে অভিনয় করেছেন তরুণ অভিনেত্রী মন্দিরা চক্রবর্তী। এতে আরও অভিনয় করেছেন শরীফুল রাজ, মিথিলা, ইরেশ যাকের, আজাদ আবুল কালাম, খায়রুল বাসার, ঝুনা চৌধুরী, সাহানা সুমী প্রমুখ।
আপন আয়নায়
বছর পাঁচেকের ক্যারিয়ারে টিভি নাটকে হালের শীর্ষ অভিনেত্রীর একজন হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন সাদিয়া। অল্প সময়েই সাবলীল অভিনয়ে দর্শকমহলে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি।
অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান কেন এত জনপ্রিয়? দর্শক হিসেবে নিজেকে নিয়ে মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছিল তাঁকে। তাঁর ভাষ্যে, ‘জনপ্রিয় কখনো নিজে থেকে হতে চাইনি, এটা করলে জনপ্রিয় হব, ওটা করলে জনপ্রিয় হব, এটা মাথায় ছিল না কখনো। দর্শকেরা আমার কাজ, চরিত্রগুলোকে ভালোবেসেছে। জনপ্রিয় দুইভাবে হওয়া যায়, ইতিবাচক ও নেতিবাচক—দুটো ব্যাপারই কাজ করে। আমার মনে হয়, মানুষ আমাকে ইতিবাচকভাবে ভালোবাসে।’
সাদিয়া বলেন, ‘মিডিয়ায় আসার পাঁচ বছর আগে যেমন ছিলাম, এখনো তেমনই আছি। আমার মধ্যে কোনো পরিবর্তন নেই। মানুষ হিসেবে আমি আমার মতো, নিজের সত্তাকে পাল্টাতে চাই না। মানুষের ভেতরের সৌন্দর্য ক্যামেরায় দেখা যায়। মানুষ মন থেকে কেমন, ভেতরের মানুষটা কেমন, সেটা অভিনয়ের ওপর ছাপ ফেলে। অভিনয় করছি, শিখছি, চেষ্টা করছি। মাঝেমধ্যে ভয়ও লাগে, অতি অভিনয় হয়ে যাচ্ছি কি না।’
সামনে কী
‘কাজলরেখা’ মুক্তির আগেই একাধিক সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছেন সাদিয়া। ইতিমধ্যে একটি ওয়েব সিনেমার দৃশ্যধারণ শেষ করেছেন। পোস্টপ্রোডাকশনের কাজ চলছে। আরও একাধিক সিনেমা নিয়ে আলাপ চলছে, এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ঈদুল আজহায়ও কয়েকটি নাটকে দেখা যেতে পারে তাঁকে কিন্তু সেসবের এখনো শুটিং শুরু করেননি তিনি।