বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনের একাংশের স্ক্রিনশট

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রথমে নিখোঁজ হন বাংলাদেশি সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। এর কয়েকদিন পর কলকাতার নিউ টাউনের বিলাসবহুল আবাসন ‘সঞ্জিভা গার্ডেন’ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। তার এই মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। এটিকে একটি ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তবে এই সংসদ সদস্যের সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছিল তা এখনও পরিষ্কার নয়। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে উভয় দেশের কর্তৃপক্ষ। তবে বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। তদন্তের সময় কলকাতার এক ক্যাবচালক পুলিশকে জানিয়েছেন, তার গাড়িতে ওঠা এক ব্যক্তিকে হত্যার পর লাশ তার টুকরা টুকরা করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিবিসি বাংলার সঙ্গে এই ঘটনা নিয়ে কথা বলেছেন কলকাতা বিধান নগর পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার মানব শ্রিংলা। তিনি বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় এক ক্যাবচালক জানিয়েছে, ‘১৩ মে যে ব্যক্তিকে তিনি গাড়িতে তুলেছিলেন তাকে হত্যার পর তার লাশ টুকরা টুকরা করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’

তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি বিবিসি বাংলা।

আনোয়ারুল আজিমকে হত্যা করা হয়েছে কিনা, অথবা তার মরদেহ পাওয়া গেছে কিনা, সে বিষয়ে কলকাতার পুলিশ তখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অ্যান্টি টেররিস্ট ইউনিটের কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, তদন্তে নেমেই প্রথমে এমপি আনোয়ারুল আজিমকে বহনকারী ক্যাবচালককে আটক করেন তারা।

সেই ক্যাবচালক জানিয়েছেন, আজিমকে গাড়িতে তোলার পর আরও তিন জন তার গাড়িতে ওঠেন। তাদের মধ্যে দুই পুরুষ ও এক নারী ছিলেন। পরে এই চার জন কলকাতা নিউটাউনের ওই বাড়িতে যান।

সিসিটিভি ফুটেজ ওই চার জনকে বাড়িতে প্রবেশ করতে দেখেছেন এটিএফ কর্মকর্তারা। পরে তিন জন বাড়ি থেকে বের হয়ে আসলেও এমপি আজিমকে আর দেখা যায়নি।

এটিএফ কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে দুই পুরুষ বাংলাদেশে ফিরে আসেন। বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগকে এ বিষয়ে জানানো হলে তারা সন্দেহভাজন ওই দুই জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের দেওয়া তথ্য কলকাতার পুলিশকে জানায় বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। পরে এমপি আনোয়ারুল আজিমের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ।

নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাটের ভেতর রক্তের দাগ রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। তবে বুধবার দুপুর পর্যন্তও তার মরদেহের কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। যে ফ্ল্যাটে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সেটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। সেখানে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আনোয়ারুল হত্যায় প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশিরা জড়িত বলে তথ্য রয়েছে। তবে ভারতের কেউ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এমন কোনও তথ্য এখনও তাদের কাছে নেই। আটককৃত সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদের পর খুনের কারণ ও উদ্দেশ্য জানা যাবে।