রাবিতে আদিবাসী ছাত্র সংগঠনের নেতাদের উপর হামলা

আহত এক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

প্রতিনিধি রাবি: নবগঠিত কমিটিকে কেন্দ্র করে ‘বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র অধিকার পরিষদের’ দুই নেতার ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. কুদরাত-ই-খুদা একাডেমিক ভবনের সামনের তিন রাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতারা তাদের ওপর এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

হামলার শিকার দুজন হলেন—বৃহত্তর চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক রোনাল চাকমা ও রাবি শাখার নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামিন ত্রিপুরা।

অপরদিকে অভিযুক্তরা হলেন—জিনিস চাকমা, সুমন চাকমা, সুরেন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা, সুদিপ্ত তঞ্চঙ্গ্যা, দিব্য চাকমা, উজ্জল তঞ্চঙ্গ্যা, বিজয় চাকমা প্রমুখ। তারা সকলেই পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সদস্য।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সংগঠন সূত্রে জানা যায়, সংগঠনটির এ দুই নেতা রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে রিকশাযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হল থেকে শের-ই বাংলা হলের দিকে যাচ্ছিলেন। তারা ড. কুদরত-ই-ক্ষুধা একাডেমিক ভবনের সামনে আসলে রিকশার পথরোধ করে প্রায় ১৫ জন তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তরে নেওয়া হয়। এরপর রাত ১০টার দিকে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক রোনাল চাকমা বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় নতুন কমিটি করেছি। এরই প্রেক্ষিতে তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। আমরা এই হামলার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

হামলার শিকার অপর নেতা শামিন ত্রিপুরা বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসে আসার প্রথম মাসেই আমাকে ফোন কলে মামলা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। যতই দিন যাচ্ছিল এ নির্যাতন বাড়ছিল। কিন্তু আমি রক্ষণশীলভাবে রাজনীতি করে এগিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে জ্ঞান চর্চা এবং মুক্তবুদ্ধির প্রগতিশীল রাজনীতি করার সুযোগ ছিল, সেখানে এ হামলা ন্যক্কারজনক। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

অভিযোগের বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাবি শাখার সভাপতি জিনিস চাকমা বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন যাবৎ ক্যাম্পাসে পাহাড়ি ছাত্রদের নানা অধিকারের বিষয়ে কথা বলে আসছি। নতুন এই সংগঠনটি গতকাল হঠাৎ বহিরাগতদের দিয়ে সম্মেলন করে তাদের নতুন কমিটি ঘোষণা করে। এ বিষয়ে আলাপ করতে রিক্শায় যাওয়ার পথে শামিন ত্রিপুরাকে ডাক দিই। তবে তিনি ডাক না শোনায়, আমরা জোর করে রিক্শা থামাই। এ সময় ধাক্কা লেগে রিক্শা থেকে পড়ে যায় শামিন। আমাদের মধ্যে একটু বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে তারা বিষয়টা যেভাবে প্রচার করছেন মোটেই বিষয়টা এমন ছিল না। আমরাই প্রক্টরকে ফোন দিয়ে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘এ বিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি। আমি তাদেরকে একটা লিখিত অভিযোগ জমা দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

প্রসঙ্গত, শনিবার সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ৭ম কাউন্সিল সম্পন্ন হয়। এ কাউন্সিলে সমু চাকমাকে সভাপতি ও শামিন ত্রিপুরাকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করা হয়।