প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর বৈঠক করার খবর পেয়ে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের বনবাড়িয়া কাদাই পার্কের ভেতরে নবনির্মিত রিসোর্টে এই অভিযান চালানো হয়। তবে পুলিশ কাউকে খুঁজে পায়নি।
এ ঘটনায় পুলিশ পার্কের তিন কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে এসেছে। এ ছাড়া পার্কের মূল ফটকের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ জব্দ করা হয়েছে।
এ সম্পর্কে আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিয়ে এক চেয়ারম্যান প্রার্থী গোপন বৈঠক করছেন বলে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী অভিযোগ করেছিলেন। এরপর পুলিশ গতকাল রাত ১০টার দিকে উপজেলার বনবাড়িয়া কাদাই পার্কের ভেতরে রিসোর্টটিতে যায়। তবে সেখানে তেমন কাউকে পাওয়া যায়নি। পার্কের মূল ফটকের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ জব্দ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন কর্মীকে থানায় আনা হয়েছে। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত চলছে।
প্রথম ধাপে আগামী বুধবার সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে। এখানে পাঁচজন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা রিয়াজ উদ্দিন (আনারস), জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রাশেদ ইউসুফ (দোয়াত–কলম), জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এস এম আহসান হাবীব (ঘোড়া), বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এস এম নাছিম পূরেজা নূর দিপু (মোটরসাইকেল) ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম (কাপ-পিরিচ)।
প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে গতকাল রাতে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে জানতে আজ সকালে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠিয়েও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে রিয়াজ উদ্দিনের অনুসারী সিরাজগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এ বিষয়ে আবার কিসের বক্তব্য দেব।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাদাই পার্কের পাশের এক বাসিন্দা বলেন, ‘গতকাল রাত পৌনে নয়টার দিকে পার্কের ভেতরে ঢুকে একটি লালচে জিপগাড়ি দেখতে পাই। ১৫ থেকে ১৬ জন মধ্যবয়সী লোক সেখানে ছিলেন। পার্কের ভেতরে ঢোকার পর আমাকে তাঁরা বের করে দেন। পার্কের ভেতরের রিসোর্টের বাতিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।’ কখন সেসব লোক বেরিয়ে গেছেন, তা তিনি বলতে পারেননি।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তবে সেখানে অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি।’