রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশ বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির কর্মীরা ক্লান্ত, নেতারা হতাশ, কেউ কেউ বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। বিএনপির মুখে আন্দোলনের কথা শুনলে ঘোড়ারও হাসি পায়।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয় শ্রমিক লীগ।

প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে শ্রমিক দলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা–কর্মীরা সমাবেশে অংশ নেন। তাঁদের কেউ কেউ একই রঙের টি–শার্ট, কেউ একই রঙের ক্যাপ (টুপি) পরে অংশ নেন। অনেকে আবার একই রঙের ছাতা মাথায় দিয়ে সমাবেশে মিছিল নিয়ে আসেন। বেলা তিনটায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও গরমের কারণে দেড় ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সমাবেশ শুরু হয়।

সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির নেতাদের কারও সঙ্গে কারও মিল নেই। একেকজনের একেক কথা। বিএনপির মধ্যে কাউকে পছন্দ না হলে বলে সরকারের এজেন্ট। এই বিএনপিকে আমরা ভাঙতে চাই না। তারা নিজেরা নিজেদের ভাঙনের জন্য দায়ী হবে। তাদের ঘরে এত শত্রু, নিজেদের ভাঙনের জন্য বাইরের শত্রুর প্রয়োজন হবে না।’

বিএনপির আন্দোলনের শক্তি নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আন্দোলনে জনগণ লাগে। তাদের সঙ্গে জনগণ নেই। তাদের হাতে ১৫ আগস্টের রক্তের দাগ। তাদের হাতে ২১ আগস্টের রক্তের দাগ। তাদের হাতে শ্রমিকের রক্তের দাগ। তারা আবার ক্ষমতায় আসতে পারলে রক্তে ভাসিয়ে দেবে।

তারেক রহমানের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রিমোট কন্ট্রোল (দূরনিয়ন্ত্রিত) নেতাকে এ দেশের মানুষ গ্রহণ করে না। সাহস থাকলে রাজপথে আসুন। লন্ডনে বসে আন্দোলন হবে না, এটা প্রমাণ হয়ে গেছে।’

বিএনপির নেতাদের লজ্জা নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, “একসময় মনে করতাম, বাংলাদেশ আমাদের জন্য বোঝা। বাংলাদেশের যে উন্নয়ন, অগ্রগতি, এটা দেখে আমি লজ্জা পাচ্ছি।’ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী দেখতে পায়, বিএনপি কালো চশমা পরেছে, তারা দেখতে পায় না।’

বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা বিদেশিদের কাছে নালিশ করে, কার কাছে নালিশ করবেন? যাদের কাছে নালিশ করতেন, তাদেরও বেসামাল অবস্থা। এখন আমেরিকায় আরব বসন্ত। ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয় ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করছে। পেছনের দরজা দিয়ে সমাবেশে উপস্থিত হয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীন সফরে গেছেন কয় দিন আগে, সে সময় সাংবাদিকেরা জিজ্ঞাসা করল, আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন এত প্রতিবাদ? তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, এটা গণতন্ত্রের অংশ। প্রফেসরকে লাঠিপেটা, কী নির্যাতন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে, কী যে বর্বরতা। তখন ভাবতে অবাক লাগে, এই দেশ নাকি গণতন্ত্রের প্রবক্তা, মানবাধিকারের কথা বলে।’

শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শ্রমিকদের অধিকার দিবসে আমি বলব, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। নেত্রী যা করেছেন, ভবিষ্যতে আরও করবেন। নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে শত্রুতা সৃষ্টি করবেন না।’

জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি নুর কুতুব আলম মান্নানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আফজাল হোসেন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। সমাবেশের সঞ্চালনায় ছিলেন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম আযম খসরু।