ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রাশিয়ার বিধ্বস্ত বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট। গতকাল ইউক্রেনের সীমান্তের কাছে দেশটির বেলগোরোদ শহরে | ছবি: রয়টার্স
পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক: ইউক্রেন সীমান্তের কাছে বেলগোরোদ শহরে ইউক্রেনের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বহুতল একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ধসে পড়েছে। এতে কমপক্ষে ৭ জন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন। রুশ কর্মকর্তারা আজ রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন।
বেলগোরোদ অঞ্চলের গভর্নর ভ্যাচেস্লাভ গ্ল্যাদকভ ওই ঘটনার একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। তাতে দেখা গেছে, ১০ তলা একটি ভবন ধসে পড়ছে। তিনি বলেন, ইউক্রেনীয় সেনাদের ব্যাপক গোলাবর্ষণের মুখে পড়েছে বেলগোরোদ শহর ও এই অঞ্চল। একটি বহুতল ভবনে ইউক্রেনের সেনাদের সরাসরি হামলায় একটি ১০ তলা ভবনের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত পুরো প্রবেশমুখ ধসে পড়েছে।
রাশিয়ার ম্যাশ টেলিগ্রাম নিউজ চ্যানেলে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের হামলায় ৭ জন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন। তবে এ হামলায় কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, তা প্রাথমিকভাবে স্পষ্ট করা হয়নি। হামলায় পশ্চিমা দেশগুলোর সরবরাহ করা কোনো অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তা জানানো হয়নি।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ওই এলাকায় অনেক অ্যাম্বুলেন্স ও অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি কাজ করছে। প্রত্যক্ষদর্শী আরও বলেন, ‘১০তলা ভবনের পুরোটাই ধসে পড়েছে। এ ঘটনায় অনেককে হতাহত হতে দেখেছি। উদ্ধারকর্মীরা কাজ শুরু করেছেন।’
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী দুটি সোভিয়েত আমলের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের বাহিনী বেলগোরোদ লক্ষ্য করে উৎক্ষেপণ করেছিল।
এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, রাশিয়ার ভলগোগ্রাদ এলাকায় একটি তেল শোধনাগারে ড্রোন হামলা করেছে ইউক্রেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, শনিবার দিবাগত রাতের ওই হামলার সময় আটটি ড্রোন তারা ধ্বংস করেছে। তবে একটি ড্রোনের হামলায় ওই তেল শোধনাগারে আগুন লেগে যায়। অবশ্য এ হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশই দাবি করে আসছে, তারা বেসামরিক কোনো অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা করে না। তবে এই যুদ্ধে দুই পক্ষেরই অনেক বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া।
এ মাসের শুরুর দিকে রুশ সেনারা ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বের খারকিভ অঞ্চলে নতুন করে হামলা শুরু করেন। এর ফলে পার্শ্ববর্তী রাশিয়ার বেলগোরোদ অঞ্চলটি ইউক্রেনের ড্রোন ও গোলা হামলার মুখে পড়ে। সেখানে ইউক্রেনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও বারবার হামলা শুরু করেছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত মার্চে বলেন, ইউক্রেনের মধ্যে মস্কোর পক্ষ থেকে একটি বাফার জোন (নিরপেক্ষ এলাকা) গড়া হবে। এতে শত্রুসেনাদের থেকে বেলগোরোদে হামলা ঠেকানো যাবে। গতকাল রাশিয়ার পক্ষ থেকে খারকিভে নতুন করে আরও চারটি গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করা হয়।
এদিকে রাশিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাশিয়া বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে যে হামলা করছে, তার জবাবে ড্রোন হামলা করা হচ্ছে।