নিজস্ব প্রতিবেদক: নাগরিকের সংবেদনশীল তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আইডি ব্যবহার করে তথ্য চুরি ও অনলাইনে বিক্রির ঘটনাকে আতঙ্কজনক বলে উল্লেখ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তারা বলেছে, অব্যাহতভাবে সরকারি সংস্থা থেকে তথ্য ফাঁসের ঘটনা সরকারের সক্ষমতা ও শুদ্ধাচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে টিআইবি এসব কথা জানিয়েছে। ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ও মুঠোফোনের কল ডেটা রেকর্ডসহ (সিডিআর) নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও অনলাইনে বিক্রির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এসব তথ্য চুরি হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুটি সংস্থার কর্মীদের আইডি ব্যবহার করে।

এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এমন একটি প্রতিষ্ঠান থেকে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য পাচারের ঘটনা ঘটল, যা এই তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত। আবার এমন ব্যক্তিদের আইডি ব্যবহার করে এই তথ্য পাচার হয়েছে, যাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। অর্থাৎ সরকার যে প্রক্রিয়া ও কারিগরি কাঠামোর মাধ্যমে নাগরিকের ব্যক্তিগত সংবেদনশীল তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চায়, তার সক্ষমতা ও শুদ্ধাচারও প্রশ্নবিদ্ধ।
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতে সরকারের গৃহীত যে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ, তা ফাঁপা বুলি ও ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, প্রায়ই বাংলাদেশের নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঘটনা সামনে আসে। কিন্তু তা রোধে কোনো উদ্যোগ ও সুরক্ষাব্যবস্থার কথা আজ পর্যন্ত লক্ষ করা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই কর্মকর্তার পরিচয় ব্যবহারে নাগরিকের সংবেদনশীল তথ্য চুরি করে বিক্রির ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া পর্যালোচনা করে টিআইবি আগেই জানিয়েছিল, সরকারের অধীনস্ত সংস্থাকে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনগণের স্বার্থরক্ষার নামে জবাবদিহির বাইরে ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারের সুযোগ দিলে ঝুঁকি থেকে যায়। বিচার বিভাগীয় তদারকি ছাড়া সরকারি সংস্থাকে ডেটা সার্ভারে অনুপ্রবেশের সুযোগ দিলে তা অপব্যবহার হওয়ার যথেষ্ট ঝুঁকি থাকবে।

নাগরিকের তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রস্তাবিত ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইনটি সংশোধন করে দ্রুত প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।