হাইকোর্ট ভবন | ফাইল ছবি |
নিজস্ব প্রতিবেদক: সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা বহালের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১১ জুলাই তারিখ নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার শুনানির নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।
আগের ধারাবাহিকতায় রিভিউ আবেদনটি আজ আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ২৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও রিট আবেদনকারীদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘আপিল বিভাগ আগামী সপ্তাহে শুনানির জন্য দিন রাখার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। সামনে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ। তাই অবকাশের পর শুনানির জন্য আরজি রাখা হয়। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানির দিন নির্ধারণ করে দেওয়ার কথা বলেন। আপিল বিভাগ রিভিউ শুনানির জন্য ১১ জুলাই দিন নির্ধারণ করেছেন।’
বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। এর বৈধতা নিয়ে করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। একই বছরের ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সর্বসম্মতিতে আপিল খারিজ করে রায় দেন।
২০১৭ সালের ১ আগস্ট আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা তাঁর লেখা রায়ে গণতন্ত্র, রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, সুশাসন, দুর্নীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দেন।
এস কে সিনহার এই পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ-অসন্তোষ প্রকাশ করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, দলীয় নেতা ও সরকারপন্থী আইনজীবীরা। কেউ কেউ তখনকার প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেন। অন্যদিকে এই রায়কে স্বাগত জানায় বিএনপি।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার পর ছুটি নিয়ে বিদেশে যান এস কে সিনহা। ছুটি শেষে কানাডা যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনে রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। ২০১৭ সালের নভেম্বরে তাঁর পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে পৌঁছায়। পরে তাঁর পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
এরপর ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আপিল খারিজ করে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর আপিল বিভাগে আবেদন (রিভিউ) করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০২২ সালের আগস্টে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওই আবেদন ওঠে। চেম্বার আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে ওঠে।