সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হওয়া মোহাম্মেদ সাখাওয়াত হোসেন (বাঁয়ে) এবং সোনাতলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হওয়া মিনহাদুজ্জামান লীটন | ছবি: সংগৃহীত |
প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বড় ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নানের ছেলে পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মেদ সাখাওয়াত হোসেন। এ ছাড়া সোনাতলায় পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নানের ছোট ভাই ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিনহাদুজ্জামান লীটন। বুধবার সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলায় শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
সারিয়াকান্দিতে সাখাওয়াত হোসেন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭ হাজার ২৫২ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ও বর্তমান চেয়ারম্যান রেজাউল করিম কাপ পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৩ ভোট। অন্যদিকে সোনাতলায় মিনহাদুজ্জামান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২০ হাজার ৪৮৩ ভোট। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেনকে তিনি হারিয়েছেন।
সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলা নিয়ে গঠিত বগুড়া-১ আসনে টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান। ২০২০ সালের ১৮ জানুয়ারি মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে তাঁর স্ত্রী সাহাদারা মান্নান দলীয় মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন। গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয় দফায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই সারিয়াকান্দিতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে দলের বেশ কয়েকজন নেতা মাঠে নামেন। কিন্তু গত ১৬ মার্চ আস্থাভাজন নেতা-কর্মীদের নিজের বাসায় ডেকে সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান তাঁর ছেলে মোহাম্মেদ সাখাওয়াত হোসেনকে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী ঘোষণা করেন। এরপর অনুসারী নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠে নামেন সাখাওয়াত। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, সাখাওয়াত মায়ের অনুসারীদের নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
সাহাদারার ছেলে ছাড়াও সারিয়াকান্দিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম (মন্টু), উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিক আহম্মেদ, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী প্রার্থিতা দাখিল করেন।
অন্যদিকে সোনাতলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নানের ছোট ভাই মিনহাদুজ্জামান। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং বর্তমান চেয়ারম্যান। তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থিতা দাখিল করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্যের স্বজনদের নির্বাচন না করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরও নির্বাচনী মাঠে থেকে যান সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নানের ছেলে ও ছোট ভাই।
এর মধ্যে সোনাতলা উপজেলায় মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী জাকির হোসেন গত রোববার বগুড়ায় সংবাদ সম্মেলন করে আনারস প্রতীকের প্রার্থী মিনহাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রভাব খাটানো ও প্রচারণায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। অবাধ, সুষ্ঠু, প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত না হলে ভোট বর্জনের হুমকিও দেন তিনি।
মনোনয়নপত্র দাখিলের পর থেকেই তা প্রত্যাহারের জন্য নানা চাপ ও হুমকি এবং প্রচারণায় বাধা প্রদানের অভিযোগ তোলেন জাকির হোসেনের। হামলা করে মিনহাদুজ্জামানের আনারস প্রতীকের ব্যালটে প্রকাশ্যে সিল মারতে ভোটারদের চাপ ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
দুই দিন পর পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে মিনহাদুজ্জামান তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন।