জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদীপ প্রজ্বালন করে বছরব্যাপী নজরুলজয়ন্তী আয়োজনের উদ্বোধন করেন সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
অনুষ্ঠানে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের সংবিধান বলছে প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ; কিন্তু বাস্তবে তা নয়। আমাদের রাজনীতি আজ জনবিচ্ছিন্ন, বৈরী। আমরা নজরুলকে স্মরণ করি, কিন্তু ধারণ করি না।’
কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের করে করে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটভুক্ত সংগঠনের কর্মীরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
‘মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান’ শিরোনামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন এবং সংগঠনের উপদেষ্টা সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব রফিউর রাব্বি।
রফিউর রাব্বি বলেন, নজরুল ধর্ম-বর্ণ ও জাতীয়তাবাদের বিভাজন থেকে মানুষের মুক্তির কথা বললেও তাঁর জীবদ্দশায় এবং তার পরে নজরুলকেই এই ধর্মের শিকলে আবদ্ধ রাখার জন্য শাসকগোষ্ঠী এবং ধর্মান্ধরা বারবার চেষ্টা চালিয়েছে। সে ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। নজরুল জাতীয় জীবনে, আচারে-আয়োজনে এখনো সমানভাবে প্রাসঙ্গিক এবং অপরিহার্য।
রফিউর রাব্বি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের সঙ্গে নজরুলের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এখানে বসে তিনি কবিতা লিখেছেন, গান রচনা করেছেন, সারা রাত জেগে গান করেছেন। ১৯২৬ সালে এই নারায়ণগঞ্জ থেকে তিনি নির্বাচন করেছেন। পূর্ববঙ্গ থেকে কেন্দ্রীয় আইন সভায় উচ্চ পরিষদের সদস্যপদের জন্য নির্বাচন করেছেন। তাঁর নির্বাচনী এলাকা ছিল ঢাকা-ফরিদপুর-বরিশাল-ময়মনসিংহ জেলা।
এর আগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শহরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার থেকে শোভাযাত্রা বের করে করে সাংস্কৃতিক জোটভুক্ত সংগঠনের কর্মী শুভাকাঙ্ক্ষীরা। শোভাযাত্রাটি চাষাঢ়া শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। অনুষ্ঠানে গান, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করেন জোটভুক্ত সংগঠনের শিল্পীরা।