বাগমারা উপজেলা নির্বাচন: আ.লীগের তিনজনের মধ্যে একজনকে নিয়ে তোড়জোড়

রাজশাহী জেলার মানচিত্র

প্রতিনিধি বাগমারা: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়া তিনজনের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে দুই প্রার্থী দলের কাউকে তেমন পাশে পাচ্ছেন না। সবার তোড়জোড় একজনকে নিয়ে। তিনি হলেন জাকিরুল ইসলাম (ঘোড়া)। রাজশাহীর জেলা আওয়ামী লীগের এই সহসভাপতিকে জেতাতে এককাট্টা ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের সবাই।

এর আগে চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাগমারার চেয়ারম্যান ছিলেন জাকিরুল। এবারও দলীয় নেতা–কর্মীদের কাছ থেকে পুরো সমর্থন পাচ্ছেন তিনি। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অপর দুই প্রার্থী হলেন উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক ওরফে আর্ট বাবু (আনারস) এবং জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাছিমা আক্তার (মোটরসাইকেল)। তাঁদের মধ্যে আবদুর রাজ্জাক সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হকের এবং নাছিমা আক্তার বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল কালামের অনুসারী। কিন্তু নির্বাচনের মাঠে দলের কাউকে পাশে পাচ্ছেন না এই দুই প্রার্থী। 

দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে বাগমারা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, তাঁরা সভা করে জাকিরুল ইসলামকে দলীয় সমর্থন দিয়েছেন। তাঁকে জেতানোর জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ (বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল কালামের নেতৃত্বাধীন) জাকিরুল ইসলামকে সরাসরি সমর্থন দিয়েছে। অপর দিকে আবদুর রাজ্জাকের দাবি, তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হকের অনুসারী। তাঁর পক্ষে অনুসারীদের সমর্থন রয়েছে।

জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাছিমা আক্তার বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল কালামের অনুসারী হওয়ার পরও তাঁর পক্ষে কোনো নেতা-কর্মীকে প্রকাশ্যে প্রচারণায় মাঠে দেখা যাচ্ছে না। বরং গত বুধবার বিকেলে নির্বাচনী এক সমাবেশে সংসদ সদস্য আবুল কালামের স্ত্রী তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র শায়লা খন্দকার জাকিরুল ইসলামের পক্ষে ভোট চেয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। সংসদ সদস্যদের কোনো প্রার্থীকে সমর্থন না দেওয়ার নির্দেশনা থাকায় আবুল কালাম মাঠে নামছেন না। তাঁর স্ত্রীর সরাসরি প্রচারণায় অংশ নেওয়াকে এমপির ছায়া সমর্থন হিসেবে দেখছেন ভোটাররা।

জাকিরুল ইসলামের পক্ষে দলের স্থানীয় অন্যান্য নেতাও নিয়মিত প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিটি ইউনিটের নেতা-কর্মীরা এই প্রার্থীর বিষয়ে সক্রিয়।

অপর দিকে কৃষক লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নিয়ে নিজের মতো প্রচারণা চালাচ্ছেন আবদুর রাজ্জাক। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হকের অনুসারী হলেও তাঁকে পাশে পাচ্ছেন না। যদিও আগে আবদুর রাজ্জাক বলেছিলেন, তিনি সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হকের অনুসারী। পরে এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে চারজন নেতা দাবি করেন, এনামুল হকের ছায়া সমর্থন রয়েছে আবদুর রাজ্জাকের প্রতি।

এ প্রসঙ্গে এনামুল হকের অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান  বলেন, তাঁদের কোনো প্রার্থী নেই। ভোটাররা তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।

এদিকে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কয়েকজন নারী কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে তাঁর সঙ্গে দেখা যায়নি। এ ছাড়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন বাগমারায় এসে জাকিরুল ইসলামের পক্ষে কয়েকটি সভায় বক্তব্য দিয়ে তাঁকে (জাকিরুল ইসলাম) ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

জয়ের বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়া জাকিরুল ইসলাম বলেন, দলের ও সাধারণ ভোটারের সমর্থন তাঁর প্রতি রয়েছে, এটা ভালোবাসা। এর প্রতিফলন ঘটবে ২১ মে।