বেলকুচিতে মেয়রের ওপর হামলায় ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল। শুক্রবার বিকেলে পৌর শহরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌরসভার মেয়র সাজ্জাদুল হক ও তাঁর শিশুসন্তানের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পৌরসভার চালা এলাকায় এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বিক্ষোভ শেষে পৌর এলাকার মুকুন্দগাতী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বেলকুচি পৌরবাসীর ব্যানারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বেলকুচি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক সরকার, মেয়র সাজ্জাদুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মেয়র সাজ্জাদুল হক বলেন, ‘বর্তমান সংসদ সদস্যের পিএস (একান্ত সচিব) সেলিম সরকার বেলকুচি উপজেলাকে একটি সন্ত্রাসী উপজেলা বানাতে চায়। কয়েক দিন আগে উপজেলা নির্বাচনে এক প্রার্থীর সমর্থককে ওরা হত্যা করেছে। ওরা আমাকেও হত্যা করতে চেয়েছিল। ওদের জন্য আজ আমার সন্তানও নিরাপদ নয়। আমার ওপর হামলার সময় থানার ওসিকে (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ফোন করেছি, তিনি রিসিভ করেননি। পরে পুলিশ সুপার ফোন রিসিভ করে সিরাজগঞ্জ থেকে পুলিশ পাঠিয়েছেন।’
সমাবেশে বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মমিন মণ্ডলের পিএস সেলিম সরকার ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ আলীসহ জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এর আগে পৌর এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলের নারীরাও একই দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে বেলকুচি পৌরসভার চালা এলাকায় আলহাজ সিদ্দিক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে মেয়র সাজ্জাদুল হকের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় মেয়র, তাঁর দুই বছরের সন্তান অস্তিত্ব হকসহ চারজন আহত হন। তাঁদের বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হামলার ঘটনার ছবি তুলতে গেলে মানবজমিন পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি আবু মুসাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। তাঁর মুঠোফোনটিও ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা।
এ ঘটনায় দুপুরে সংসদ সদস্যের পিএস সেলিমসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক। বেলকুচি থানার ওসি আনিছুর রহমান বলেন, মামলাটি ইতিমধ্যে দ্রুত বিচার আইনের ধারায় রেকর্ড করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।
আহত ব্যক্তি ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার আলহাজ সিদ্দিক উচ্চবিদ্যালয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের নিরীক্ষক দল আসে। মেয়র সাজ্জাদুল হক ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। নিরীক্ষার সময় তিনি সেখানে যান। তখন তাঁর কোলে দুই বছরের সন্তান অস্তিত্ব হকও ছিল। বেলা দুইটার দিকে বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেলে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। এ সময় সংসদ সদস্য আবদুল মোমিন মণ্ডলের পিএস সেলিম সরকারের নেতৃত্বে এক দল লোক বিদ্যালয়ের মাঠে মেয়রের পথ রোধ করে হামলা করে।