পাবনা সদর উপজেলা নির্বাচনের প্রচারে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে কাপ-পিরিচ প্রতীকের সমর্থকরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি পাবনা: পাবনা সদর উপজেলা নির্বাচনে কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর প্রচারে হামলার অভিযোগ উঠেছে আরেক প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এতে প্রার্থীর স্ত্রীসহ তিনজন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার সাদুল্লাহপুর ইউনিয়নের দুবলিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান আতাইকুলা থানার ওসি মিজানুর রহমান।

তাৎক্ষণিক এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে কাপ-পিরিচ প্রতীকের সমর্থকরা।

এ ঘটনায় কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কামিল হোসেন তিনজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয় চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ করেছেন। তবে অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী সোহেল হাসান শাহিন (মোটরসাইকেল) হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, কামিল হোসেনের স্ত্রীসহ আট থেকে ১০ জন কর্মী-সমর্থক কাপ- পিরিচ প্রতীকের প্রচারে দুবলিয়া বাজারে যান। সেখানে একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে প্রচার চালানোর সময় ফারাদপুর গ্রামের কয়েকজন যুবক কাপ-পিরিচের সমর্থক হারুনুর রশিদকে বেধড়ক মারপিট শুরু করেন।

কামিল হোসেনের স্ত্রী হালিমা খাতুন ঠেকাতে গেলে তার গায়েও হাত তোলা হয়। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে থাকা অন্যান্য নারী কর্মীদের গায়েও হাত তোলেন হামলাকারীরা। এ ছাড়া তাদের হাতে থাকা হ্যান্ডমাইক ভাঙচুর ও লিফলেট ছিঁড়ে ফেলা হয়।

হামলাকারীদের মধ্যে একজন আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখিয়ে সেখান থেকে সটকে পড়েন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন কামিল হোসেন।

মারপিটের শিকার সাদুল্লাহপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও কাপ-পিরিচ প্রতীকের সমর্থক বদরুদ্দোজা মানিক বলেন, বাজারে আমরা ভোট চাচ্ছিলাম। এ সময় আমাদের এক কর্মীর ওপর চড়াও হয় মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থক সাদুল্লাহপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রইচ উদ্দিন খানের ছেলে আরাফাত সিয়াম ও তার দলবল। এক পর্যায়ে তারা আমাদের মারধর শুরু করেন। হামলাকারীরা বলে, এখানে অন্য কোনো প্রতীকের কথা বলা যাবে না। পুরো ঘটনা ঘটনাস্থলের পাশে সিসি ক্যামেরায় পাওয়া যাবে।”

চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কামিল হোসেন বলেন, মোটরসাইকেল প্রতীকের কর্মীরা আমার এক সমর্থককে হত্যার উদ্দেশে মারপিট করেছে। ঘটনার সময় আমার স্ত্রীসহ অন্য নারী কর্মীদের শরীরের হাত তোলা ও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এতে তিনজন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অভিযোগ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

আওয়ামী লীগ নেতা রইচ উদ্দিন খান বলেন, প্রথমে কাপ-পিরিচের সমর্থকরা আমার ছেলে সিয়ামের ওপর হামলা করেন। আত্মরক্ষার্থে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। তবে আমার ছেলে কাউকে মারপিট করেনি।

হামলার অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সোহেল হাসান শাহিন বলেন, রইচ উদ্দিন খান মোটরসাইকেল প্রতীকের নির্বাচন করছেন। কিন্তু তার ছেলে আমার নির্বাচন করছেন না। পরাজিত হওয়ার ভয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।

আতাইকুলা থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, প্রচারের সময় উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। এতে কিছুটা উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পাবনা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইন প্রয়োগ করা হবে।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে ২৯ মে পাবনা সদর, ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়া উপজেলায় ইভিএমে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।