সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করা সহজ নয়: অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন আজ রোববার রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে মুট কোর্ট ক্লাবের উদ্বোধন করেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন বলেছেন, ‘আমার জানামতে, নতুন যে আইন (সাইবার নিরাপত্তা আইন) হয়েছে, সেই আইনে এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। এটা হতে পারে; তবে খুবই বিরল। এই আইন সতর্কভাবে প্রয়োগ করার কথা বলা আছে এবং এই মামলাগুলো যিনি করবেন, তাঁকে কিন্তু অনেক কিছু প্রমাণ করতে হয়। এ কারণে এই আইনে মামলা করা সহজ হবে না। কারও যেন হয়রানি না হয়, সে জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা রাখা হয়েছে এই আইনে।’

আজ রোববার সকালে রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে মুট কোর্ট ক্লাবের উদ্বোধন করতে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন এসব কথা বলেন। রাজশাহীতে সাইবার নিরাপত্তা আইনে সম্প্রতি এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। স্থানীয় একজন সাংবাদিক অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন।

রাজনৈতিক মামলার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘বাংলাদেশে আমার জানামতে কোনো রাজনৈতিক মামলা হয় না। পুলিশ কোনো রাজনৈতিক মামলাও করে না। যেকোনো একটি ঘটনা ঘটলে একজন ইনফরমেটিভ হন, পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্র বাদী হয়ে মামলাগুলো পরিচালনা করে।’

আদালতে মামলাজট প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, উন্নত দেশগুলোতে অধিকাংশ মামলা আপস ও মীমাংসার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়। এর ফলে বিচারের জন্য মামলা কমে যায়। এ কারণে ওই সব দেশে মামলাজট হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে প্রায় সব মামলা বিচারের জন্য আদালতে যায়। এসব মামলার প্রতিটিতে সাক্ষ্য ও প্রমাণ হয়। এসব প্রক্রিয়া করতে অনেক সময় লাগে। একজন বিচারকের কাছে ২০টা, ২৫টা, ৫০টা কিংবা ১০০টা মামলা থাকে। তখন নিষ্পত্তি করতে সময় লাগে। আর প্রতিদিনই মামলা যুক্ত হচ্ছে।

এর আগে আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে মুট কোর্ট ক্লাবের উদ্বোধন করেন। এ সময় সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আনন্দ কুমার সাহাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে মুট কোর্টে প্রতীকী বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা হয়। সেখানে বিচারক হিসেবে ছিলেন রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়াউর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা মামলার বাদী, সাক্ষী, আসামি, আদালতের কর্মচারী ও আইনজীবীর ভূমিকায় ছিলেন।

দুপুরে ‘আইন পেশায় কেন আসবেন’ শীর্ষক আইন ও মানবাধিকার বিভাগের একটি সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল। এতে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী ও মুহাম্মদ আশরাফ আলী। সভাপতিত্ব করেন আইন ও মানবাধিকার বিভাগের সমন্বয়ক অধ্যাপক আবু নাসের মো. ওয়াহিদ। সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ফয়জার রহমান, রেজিস্ট্রার সুরঞ্জিত মণ্ডল, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পারমিতা জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।