মাহতাব উদ্দিন | ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক মাহতাব উদ্দিনের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৯ সালের ১৮ মে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। সাহিত্যচর্চা, সাংবাদিকতা, সংগীতচর্চা মতো বহুমুখী প্রতিভার কারণে রাজশাহীতে অতি পরিচিত ছিল তাঁর নাম। 

বহুগুণের অধিকারী এই ব্যক্তি তিনশোর মত কবিতা লিখেছেন, লিখেছেন অনেক গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ। তবে প্রকাশিত গ্রন্থ একটি উপন্যাস, ‘একাত্তরের জবানবন্দি’। তার লিখা দেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। তিনি গীতিকারও ছিলেন। তার লিখা অনেক গান স্বাধীনতার আগে থেকে বেতারে বেজে চলেছে।

ষাটের দশকের শেষে মাহতাব উদ্দিন ‘সূর্য শিখা’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নাটক ও রবীন্দ্র সংগীত চর্চার জন্য। অল্প সময় নাটক সংগীত চর্চা হলেও রাজনৈতিক নেতারাই সেখানে বেশি সময় আড্ডা দিতেন। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই তৎকালীন প্রশাসন সেটি বন্ধ করে দেয়। 

এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ৩০-৩৫ জনের একটি বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন যারা গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন। তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধ চর্চা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা। 

নব্বইয়ের দশকে তিনি সম্পাদনা করতেন গণখবর নামের এক সাপ্তাহিক। কবি শামসুর রাহমান রাজশাহীতে গিয়ে পত্রিকাটি উদ্বোধন করেছিলেন। পত্রিকাটি যে দশ-বারো বছর চালাতে পেরেছিলেন তার বেশিরভাগ সময়েই সেখানে উঠে এসেছে রাজশাহী মানুষের কথা ও মুক্তিযুদ্ধের কথা।

তিনি রাজশাহীর গণমানুষের বিভিন্ন লড়াই-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। রাজশাহীতে পূর্ণাঙ্গ টিভি স্টুডিও প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল সদর দপ্তর রাজশাহী থেকে স্থানান্তরের প্রতিবাদ এবং পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের দাবিতে আন্দোলন করেছেন। 

তাছাড়াও রাজশাহীর আঞ্চলিক দৈনিক লাল গোলাপের সম্পাদক হিসেবে মাহতাব উদ্দিন দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাজশাহী মহানগর প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি।

মাহতাব উদ্দিনের জন্ম ১৯৩৯ সালে রাজশাহী শহরের শেখের চক এলাকায়। একই এলাকায় আজীবন বাস করেছেন তিনি। রাজশাহী ভোলানাথ বিশ্বেশ্বর হিন্দু একাডেমি থেকে মাধ্যমিক পাশ করে পড়েছেন রাজশাহী সিটি কলেজে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় বিএ সম্মান করেছিলেন।