রাজশাহীতে ছয় দিন ধরে মাঝারি তাপপ্রবাহ বইছে, গরম আরও বাড়তে পারে

রাজশাহীতে ছয় দিন ধরে মাঝারি তাপপ্রবাহ বইছে। দাবদাহ মাথায় নিয়ে কাজ করছেন একদল শ্রমিক। শনিবার দুপুরে নগরের গোরহাঙ্গা এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: রাজশাহীতে টানা ছয় দিন ধরে মাঝারি তাপপ্রবাহ বইছে। আজ শনিবার রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। ইতিমধ্যে রোজার মধ্যে তাপপ্রবাহের কারণে জনজীবনে অস্বস্তি নেমে এসেছে। বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়াবিদেরা জানান, ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে তীব্র তাপপ্রবাহ ও ৪২ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রাকে খুব তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। সেই হিসাবে রাজশাহীতে আজ মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে। আগের পাঁচ দিনও একই ধরনের তাপমাত্রা ছিল।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, সবশেষ গত ৩০ মার্চ রাতে রাজশাহীতে ১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। তখন তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রিতে নেমে আসে। এরপর ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। সবশেষ ৩১ মার্চ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর ১ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৮ ডিগ্রি, পরবর্তী ২ দিন ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজশাহী আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক এ এস এম গাউসুজ্জামান বলেন, আজ মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটি অব্যাহত থাকবে। মাঝে হালকা বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তবে এতে তাপমাত্রা না কমে আরও বাড়তে পারে।

এদিকে টানা তাপপ্রবাহে জনজীবনে অস্বস্তি নেমে এসেছে। তীব্র গরমে প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছেন। দিনের বেলা ঈদের কেনাকাটাতেও ভাটা পড়েছে। মানুষ রাতের দিকে কেনাকাটা করছেন। দাবদাহের মধ্যে যাঁরা বের হচ্ছেন, তাঁরা অনেকেই ছাতা ব্যবহার করছেন। শ্রমজীবীরা দাবদাহ থেকে বাঁচতে মাথায় গামছা ও টুপি পরেছেন। প্রচণ্ড গরমে অনেককে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে দেখা যায়। দাবদাহ মাথায় নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে শ্রমজীবীদের।

নগরের গোরহাঙ্গা এলাকায় সড়কে কাজ করছিলেন কিছু শ্রমিক। প্রত্যেকের কপালে ঘাম। মাথা গামছা দিয়ে মুছে নিচ্ছিলেন। তাঁদেরই একজন মোশারফ হোসেন বলেন, ‘গরমে ঘরে ফ্যানের বাতাসেই গরম লাগে। আর আমাদের রোদে পুড়ে কাজ করতে হচ্ছে। গরমে সবাই ঘরে বসে থাকলে তো সংসার চলবে না।’

নগরের জাহাজঘাট এলাকার রিকশাচালক আজিম উদ্দিন বলেন, ‘গরমে মনে হচ্ছে চামড়া পুড়ে যাবে। আজ সকালে কাজে বের হয়েছি। সকাল থেকেই গরম। বৃষ্টি না হলে এই গরম কমবে না।’ নগরের জামালপুর এলাকায় একটি পুকুরে ঝাঁপাঝাঁপি করছিল একদল শিশু-কিশোর। তারা চিৎকার করে বলে, ‘গরমে টিকা যায় না। আজ সারা দিন পুকুরে থাকব।’