গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণের সীমান্তবর্তী একটি এলাকা থেকে এলাদ কাৎজিরকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস | ছবি: এএফপি
পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক: ফিলিস্তিনের গাজায় জিম্মি দশায় থেকে এক ভিডিও বার্তায় হামলা বন্ধ করতে ইসরায়েলের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন ৪৭ বছর বয়সী এলাদ কাৎজির। আজ শনিবার তাঁর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, আজ রাতে গাজার খান ইউনিসে অভিযান চালানোর সময় কাৎজির মরদেহ উদ্ধার করেন ইসরায়েলি সেনারা। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের কিব্বুৎজ নির ওজ এলাকা থেকে তাঁকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিলেন হামাস যোদ্ধারা।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজা থেকে এলাদ কাৎজিরের মরদেহ ইসরায়েলে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর বিষয়টি তাঁর পরিবারকে জানানো হয়।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন এক হামলা চালায় গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে, এদিন হামাস যোদ্ধাদের হামলায় নিহত হন কাৎজিরের বাবা আব্রাহাম। এরপর কাৎজির ও তাঁর মা হান্নাকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয় গাজায়। গত নভেম্বরে ছয় দিনের যুদ্ধবিরতির সময় আরও ১০৪ জিম্মির সঙ্গে কিৎজিরের মাকেও মুক্ত করে দিয়েছিল হামাস।
কিৎজিরের মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলের সরকারকে দায়ী করছেন তাঁর বোন পালতি কাৎজির। তাঁর মতে, যুদ্ধবিরতির নতুন চুক্তিতে ইসরায়েল সরকার রাজি হলে তাঁর ভাই জীবিত বাড়িতে ফিরে আসতেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পালতি কাৎজির লিখেছেন, ‘আমাদের (ইসরায়েলের) নেতারা ভীরু। রাজনৈতিক স্বার্থে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন। গাজায় কেন যুদ্ধবিরতির নতুন একটি চুক্তি এখনো হচ্ছে না? প্রধানমন্ত্রী, যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা ও জোট সরকারের সদস্যরা আপনারা আয়নার সামনে গিয়ে নিজেদের দিকে একবার তাকান এবং বলুন, আপনাদের হাত রক্তে রঞ্জিত কি না।’
জিম্মিদের নিয়ে গত জানুয়ারিতে একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে হামাস। সে ভিডিওতে কাৎজিরকে বলতে শোনা যায়, তিনি একাধিকবার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন। ওই ভিডিও বার্তার মাধ্যমে গাজায় হামলা বন্ধের জন্য ইসরায়েলের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন কাৎজির। তিনি বলেছিলেন, গাজায় হামলা বন্ধ করে জিম্মিদের তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিন।
ইসরায়েলের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় নিহত হন প্রায় ১ হাজার ২০০ জন। এ ছাড়া ২৫৩ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস। জিম্মিদের মধ্যে এখনো ১২৯ জনকে মুক্তি দেয়নি হামাস। ইসরায়েলের ধারণা, এখনো যাঁরা জিম্মি, তাঁদের মধ্যে অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় গত ছয় মাসে গাজার ৩৩ হাজার ১৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।