বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সদর দপ্তর | ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি রাজশাহী: বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) এক প্রকল্প পরিচালকের কাছে কাজের জন্য দেনদরবার করতে গিয়ে স্বয়ং প্রকল্প পরিচালকের (পিডি) শার্টের কলার ধরে বসেন ঠিকাদার। আজ রোববার দুপুরে রাজশাহীতে বরেন্দ্র ভবনে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শামসুল হোদার সামনেই ঘটেছে। তিনি ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন।

ভুক্তভোগী প্রকৌশলীর নাম সুমন্ত কুমার বসাক। তিনি বিএমডিএর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। তিনি ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে নাটোর জেলায় সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ৫০টি কাজের দরপত্র আহ্বান করেন সুমন্ত কুমার বসাক। তিনি কাজটি পাঁচ থেকে সাতজন ঠিকাদারের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার পর সাত দিন ধরে কার্যালয়ে আসেননি। ঠিকাদারদের অভিযোগ, তিনি রাজশাহীর একজন ঠিকাদারকেও কোনো কাজ দেননি। কাজ দেওয়া হয়েছে নাটোর, নওগাঁ ও ঈশ্বরদীর ঠিকাদারদের। এ ঘটনার পর রোববার সুমন্ত কুমার অফিসে আসেন। এ সময় ঠিকাদারেরাও বরেন্দ্র ভবনে যান। তখন সুমন্ত কুমার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শামসুলের কক্ষে ঠিকাদারদের নিয়ে বসেন। সেখানে ঠিকাদার সাকির হোসেন ওরফে লস্কর বাবু প্রকৌশলী সুমন্ত কুমার বসাকের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন। একপর্যায়ে পাশে বসা স্থানীয় ঠিকাদার মো. রাসেল প্রকৌশলী সুমন্ত কুমার বসাকের শার্টের কলার চেপে ধরেন। এ নিয়ে তুমুল হট্টগোল হয়। একপর্যায়ে ঠিকাদারদের শান্ত করে বের করে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার সাকির হোসেন মুঠোফোনে বলেন, এই প্রকৌশলী তিন বছর ধরে একজন ঠিকাদারকে একটির বেশি কাজ দেননি। এবার তিনি ৫০টি কাজ পাঁচ–সাতজন ঠিকাদারকে দিয়ে সাত দিন ধরে কার্যালয়ে আসেননি। তাঁর আগেই তাঁরা তাঁকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, এখানে ৫০ জন ঠিকাদার আছেন। তাঁদের প্রত্যেককে একটি করে কাজ দিলে ৫০টি সংসার চলত। তিনি তা না করে পাঁচ–সাতজনকে কাজ দিয়েছেন। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তাঁরা গিয়েছিলেন। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ে এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হচ্ছিল। প্রকৌশলী সুমন্ত তাঁদের সব কথা শোনার পরে বলেন, নির্বাহী পরিচালক বাইরে আছেন। তিনি এলে তাঁর কাছে বিষয়টি বলতে হবে। এ কথা বলার পরে তাঁরা বাইরে চলে আসেন।

কলার ধরার বিষয়টি জানতে চাইলে সাকির হোসেন বলেন, উনারা (প্রকৌশলীরা) দাবি করতে পারেন। তিনি ঠিকাদার রাসেলকে প্রকৌশলী সুমন্তকে কলার ধরতে দেখেননি।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ঠিকাদার মো. রাসেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। কথা বলার জন্য সুমন্ত কুমার বসাককে ফোন করা হলে তাঁর ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

বিএমডিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শামসুল বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি বসে কথা বলতে বলতেই হঠাৎ করে ঠিকাদার রাসেল প্রকৌশলী সুমন্তের শার্টের কলার চেপে ধরেন। তাৎক্ষণিক বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ঠিকাদার হাত ধরছিলেন। সেই পর্যায়ে রয়েছে। আর বিষয়টা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। চেয়ারম্যান ও নির্বাহী পরিচালক পরে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’