ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদুল ফিতরের ছুটিতে রাজধানীতে বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এতে বাসাবাড়ি, ব্যাংক, বিপণিবিতান ও স্বর্ণালংকারের দোকানে নিরাপত্তাব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি ডিএমপির অপারেশনস বিভাগ নিরাপত্তা পরিকল্পনাসংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠায় ডিমএপি কমিশনার হাবিবুর রহমানকে। পরে এসব পরিকল্পনা যাচাই–বাছাই করে অনুমোদন দেন তিনি।

আজ রোববার ডিএমপি সূত্রে এসব পরিকল্পনার কথা জানা যায়। এর মধ্যে রয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ব্যাংক, স্বর্ণের দোকান ও বিপণিবিতানের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিভাগভিত্তিক সমন্বয় সভার ব্যবস্থা করবেন সংশ্লিষ্ট অপরাধ বিভাগের উপকমিশনার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি)। ব্যাংক, স্বর্ণের দোকানের ছাদ ছিদ্র করে, সিঁধ কেটে চুরি ও ডাকাতি যাতে না হয়, সে জন্য স্বর্ণের দোকানের ওপরে ও আশপাশের এলাকায় যাঁরা বসবাস করেন, তাঁদের ওপর বিশেষ নজরদারির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বাসাবাড়ি, অফিস-আদালত, বিপণিবিতান, ব্যাংক ও বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী দিয়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কোনো এলাকায় টহল পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে অতিরিক্ত গাড়ি প্রয়োজন হলে ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (পরিবহন) প্রয়োজনীয় গাড়ি সরবরাহের ব্যবস্থা করবেন। ঈদের ছুটির সময় দৃশ্যমান পুলিশিং নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিদিনই এলাকা ও স্থান পরিবর্তন করে কার্যকর তল্লাশিচৌকি পরিচালনা করতে হবে। এ সময় মোটরসাইকেলবিরোধী অভিযান জোরদার করতে হবে। একসঙ্গে তিনজন আরোহী নিয়ে মোটরসাইকেল চালানো যাবে না। ট্রাফিক ও অপরাধ বিভাগ যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করবে।  

পরিকল্পনা অনুযায়ী তল্লাশিচৌকিতে সাধারণ মানুষকে হয়রানি না করে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়। ঈদের ছুটিতে ফাঁকা রাস্তায় বেপরোয়া মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কারের চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঈদগাহ প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় যেন ভিক্ষুক/হকার প্রবেশ করতে না পারে, তা দায়িত্বরত পুলিশ নিশ্চিত করবে। সন্দেহজনক বা জরুরি কোনো বিষয়ে অবগত হলে তা দ্রুত সময়ে হাইকোর্টের অভ্যন্তরে সাব-কন্ট্রোল রুম বা পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে জানাতে হবে। এ ছাড়া গোয়েন্দা বিভাগ পৃথক নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

প্রতিটি থানা এলাকায় তিনটি মোটরসাইকেলে পুলিশ সদস্যরা প্রতিদিন টহল দেবেন। এতে একজন উপপরিদর্শক (এসআই)/সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও একজন কনস্টেবল থাকবেন। এসআই/এএসআইয়ের হাতে পিস্তল, বেতারযন্ত্র এবং কনস্টেবল শটগান বহন করবেন। ঢাকা মহানগরে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তাচৌকি বসিয়ে তল্লাশি করা হবে।

ডিএমপির নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, চুরি, ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশি টহল বাড়ানোর পাশাপাশি বাসাবাড়ির মালিক ও ভাড়াটেদের এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজ রোববার সন্ধ্যায় ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার লিটন কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, নগরবাসী যাতে নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করতে পারেন, সে জন্য ডিএমপি কমিশনারের (হাবিবুর রহমান) নির্দেশে এই নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। রাজধানীতে কোনো ধরনের চাঁদাবাজ ও কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা না থাকে, সে জন্য ডিএমপি কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ঈদ ও ঈদ–পরবর্তী সময়ে কোনো মানুষ ঢাকায় ফিরে যেন না দেখে তাঁর বাসা চুরি ও ডাকাতি হয়েছে। এসব মাথায় রেখে ডিএমপি নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজিয়েছে।