নওগাঁ পৌরসভার হাজীপাড়া এলাকায় বন্ধ থাকা সেচযন্ত্রের ঘর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি নওগাঁ: নওগাঁ সদর উপজেলায় একটি সেচযন্ত্র বন্ধ রাখায় প্রায় ১০০ বিঘা জমি অনাবাদি পড়ে আছে। সেচসংকটের কারণে কিছু কৃষক ধানের আবাদ না করে জমিতে তিলের চাষ করেছেন। কিন্তু পানির অভাবে তিলগাছও মরে যেতে বসেছে। বোরো জমিতে সেচ দিতে না পারায় নওগাঁ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপাড়া, মাদ্রাসাপাড়া, সরদারপাড়া, শেখপুরা ও মণ্ডলপাড়ার শতাধিক কৃষক বিপাকে পড়েছেন।
কৃষকদের দাবি, পৌরসভার হাজীপাড়া মহল্লাসংলগ্ন মাঠে একটি সেচযন্ত্র রয়েছে। মকবুল হোসেন ওরফে গ্যাদো নামের এক ব্যক্তি ওই সেচযন্ত্র পরিচালনা করে থাকেন। ওই এলাকায় প্রায় ২০০ বিঘা জমি রয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতে সেচযন্ত্রের মালিক মকবুল হোসেন কৃষকদের কাছ থেকে বোরো ধান আবাদের জন্য প্রতি বিঘা জমিতে সেচের জন্য দুই হাজার টাকা করে দাবি করেন।
আশপাশের অন্যান্য এলাকার সেচ খরচের তুলনায় বেশি টাকা দাবি করায় কৃষকেরা ওই পরিমাণ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। চাহিদা অনুযায়ী সেচ খরচ দিতে রাজি না হওয়ায় সেচযন্ত্রটি বন্ধ রেখেছেন মকবুল হোসেন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কৃষকেরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
গত ১৯ মার্চ ৬০ কৃষকের স্বাক্ষরিত ওই লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ পৌরসভার হাজীপাড়া, সরদারপাড়া ও মাদ্রাসাপাড়া মহল্লার মধ্যবর্তী মাঠে প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমি আছে। এসব জমিতে প্রতি মৌসুমে কয়েক হাজার মণ ধান হয়। বোরো মৌসুমে ওই এলাকার কৃষকদের কথা মাথায় রেখে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওই মাঠে দুটি সেচযন্ত্র স্থাপন করে দিয়েছে।
এর মধ্যে মকবুল হোসেন পরিচালিত সেচযন্ত্রের অধীনে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করা হয়। কিন্তু গত তিন বছর ধরে মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ কৃষকদের জিম্মি করে সেচ বাবদ বেশি টাকা আদায় করছেন।
কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সেচযন্ত্রের মালিক মকবুল হোসেন বলেন, ‘একটা মৌসুমে সেচযন্ত্র চালালে তিন থেকে চার লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। এ ছাড়া সেচযন্ত্রের অন্য কোনো অংশ নষ্ট হয়ে গেলেও বাড়তি খরচ হয়ে যায়। মেশিন চালাতে যে খরচ হবে, সেটা তুলতে না পারলে লোকসান গুনতে হবে।’