বজ্রপাত প্রতীকী ছবি

প্রতিনিধি ঝালকাঠি: ঝালকাঠিতে ঝড়ের সময় মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই নারীসহ এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলা ও কাঁঠালিয়া উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।

মৃত ব্যক্তিরা হলো কাঁঠালিয়া উপজেলার উত্তর তালগাছিয়া গ্রামের মৃত আলম গাজীর স্ত্রী হেলেনা বেগম (৪০), ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের ফারুক হোসেনের স্ত্রী মিনারা বেগম (৩৫) ও পোনাবালিয়া ইউনিয়নের ইছালিয়া গ্রামের ইজিবাইকচালক বাচ্চু হাওলাদারের মেয়ে মাহিয়া আক্তার (১১)।

ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে মাঠ থেকে গবাদিপশু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে তাঁদের মৃত্যু হয়।

এদিকে রাজাপুর উপজেলায় ঝড়ে প্রায় ৩০টি বসতঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে ও তার ছিঁড়ে পল্লী বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ বজ্রসহ ঝড় শুরু হয়। এ সময় অন্তত আধা ঘণ্টা তাণ্ডব চালায় কালবৈশাখী ঝড়।

রাজাপুরের বলাইবাড়ি এলাকার বাসিন্দা নুরুজ্জামান বলেন, ঝড়ে প্রতিবেশী মাইনুলের গাছ পড়ে অন্তত চারটি বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। শিশুসন্তানদের নিয়ে তাঁদের এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হচ্ছে। অল্পের জন্য তাঁরা বেঁচে গেছেন। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

রাজাপুর সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মামুন হোসেন বলেন, বলাইবাড়ি এলাকার অন্তত ১৫টি বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। গাছ পড়ে চলাচলের সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া রাজাপুর উপজেলার বলাইবাড়ি, সত্যনগর, কৈবর্তখালি, পুটিয়াখালি, গাজীরহাট, দক্ষিণ সাউথপুর, বদনিকাঠিসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক বসতঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তবে জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ঘণ্টাব্যাপী বৃষ্টিপাতের ফলে বোরো খেতের উপকার হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কৃষকদের ইউরিয়া সারের সাশ্রয় হয়েছে। বৃষ্টিতে উপকৃত হয়েছে অন্যান্য শাকসবজি ও চাষাবাদ। পাশাপশি প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যে বৃষ্টিপাত জনমনে স্বস্তি এনে দিয়েছে।

ঝালকাঠি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রাজাপুর সাব জোনাল অফিসের এজিএম মধুসূদন রায় বলেন, ঝড়ে বিভিন্ন স্থানের বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে ও অন্তত ৮–১০টি খুঁটি ভেঙে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করার লক্ষ্যে মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে।

রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, বিভিন্ন স্থানে ১৫ থেকে ২০টি বসতঘর বিধ্বস্তের খবর পাওয়া গেছে। গাছপালা ও ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের ছবিসহ আবেদন করলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।