রুমা উপজেলা পরিদর্শন শেষে বান্দরবান সার্কিট হাউস মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। শনিবার বিকেল ৩টায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি বান্দরবান: বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে হামলাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর দমন অভিযানের পাশাপাশি এলাকার জনগণ চাইলে শান্তি সংলাপও অব্যাহত রাখা হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বান্দরবান সার্কিট হাউসে জেলার আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। সার্কিট হাউসে রুদ্ধদ্বার মতবিনিময় সভার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রুমা উপজেলা পরিষদ এলাকায় যান। সেখানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) অস্ত্রধারীদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সোনালী ব্যাংক ঘুরে দেখেন। প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

কেএনএফের নাম উল্লেখ না করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমা অত্যন্ত ধৈর্যসহ সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। দুই দফা বৈঠকও হয়েছে। আরেক দফা বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আলোচনা চলমান থাকা অবস্থায় তারা ব্যাংক ডাকাতি, অপহরণ ও পুলিশ-আনসারের অস্ত্র লুটের মতো জঘন্য অপরাধ করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্র চুপ থাকতে পারে না। তিনি বলেন, শান্তি আলোচনায় অস্ত্রধারীরা স্বীকৃত অ্যাজেন্ডা হিসেবে কোনো কিছু দেয়নি; বরং আলোচনা থেকে সরে গিয়ে নিজেদের একতরফা স্বার্থসিদ্ধির জন্য শক্তির জানান দিতে রুমা ও থানচিতে পরপর ঘটনা ঘটিয়েছে।

সশস্ত্র অপরাধীদের দমনে কঠোর অভিযান চালানো হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে যা যা প্রয়োজন সবকিছু করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুলিশ, র‍্যাব ও আনসারের সংখ্যা বাড়ানো হবে। সীমান্তে বিজিবির তৎপরতা জোরালো করা হবে। সব বাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীও সেনাবাহিনীর প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযান শুরুর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অভিযান চলবে, তবে বর্তমান সরকার জনগণের নির্বাচিত সরকার। এ অঞ্চলের জনগণ চাইলে শান্তি আলোচনাও অব্যাহত রাখা হবে। সরকার কখনো জনগণের বাইরে নয়।

জেলা প্রশাসনের আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত রুদ্ধদ্বার মতবিনিময় সভায় প্রধান ও বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর বাহাদুর উশৈসিং। আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমা, সেনাবাহিনী ও বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

২ ও ৩ এপ্রিল রুমা এবং থানচির দুটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় কেএনএফ। রুমায় ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে লুটের চেষ্টা করে এবং ব্যাংকে পাহারায় থাকা পুলিশ-আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায়। থানচি কৃষি ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টার থেকে ২ লাখ ৪২ হাজার ও সোনালী ব্যাংক থেকে ৭ লাখ ৯৬ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।