বগুড়া জেলার মানচিত্র

প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া কর্মীরা বকেয়া বেতন প্রদান ও চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা জানান, তাঁদের ৩২ জন কর্মীর ২১ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। গত সোমবার বগুড়ার সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শফিউল আজম স্বাক্ষরিত পৃথক পৃথক নোটিশ দিয়ে তাঁদের চাকরিচ্যুত করেছেন। ঈদের আগে এই চাকরিচ্যুতি অমানবিক। এ সময় তাঁরা ঈদের আগেই বকেয়া বেতন পরিশোধ ও চাকরিতে বহালের দাবি জানান।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শফিউল আজম বলেন, ‘চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পাওয়া কর্মচারীদের অব্যাহতি দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য অধিদপ্তরে কথা বলেছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অসহযোগিতা করলে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।’

তবে এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সারমী ট্রেডার্সের কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁর মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন দেশের ৫৩টি উপজেলায় বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ের ভিত্তিতে টিকেট ক্লার্ক, বাবুর্চি ও নৈশপ্রহরী পদে ৪৫৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। নওগাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সারমী ট্রেডার্সের মাধ্যমে বগুড়ার আট উপজেলায় ৩২ জন কর্মচারী নিয়োগ পান। দুই বছরের ওই প্রকল্পের মেয়াদ পরে আরও দুই বছর বর্ধিত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এসব কর্মচারীর বেতন মাসে ১৬ হাজার ১৩০ টাকা। প্রথম দফায় ২০২০ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের মে মাস পর্যন্ত নিয়মিত বেতন পেয়েছেন তাঁরা। এরপর থেকে বেতন বকেয়া রয়েছে।

শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকিট ক্লার্ক মরিয়ম খাতুন বলেন, ‘হাসপাতালে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করেছি। তবু ২১ মাস ধরে বেতন বকেয়া রয়েছে। বেতনের জন্য ঠিকাদারের কাছে ধরনা দিয়েও লাভ হয়নি। সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও ফল হয়নি।’

মরিয়ম খাতুন অভিযোগ করেন, ঠিকাদারকে তিন লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরি নিতে হয়েছে। প্রতি মাসে বেতন থেকেও দুই হাজার টাকা কেটে নিতেন। এখন বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে উল্টো চাকরিচ্যুতির নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

গাবতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকিট ক্লার্ক আজিজুল হক বলেন, ‘২১ মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না। স্ত্রী–সন্তান নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছি।’