প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বাসস, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের সেবা করাকে একটি বড় কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জনগণের সেবা করার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, এটি তাঁদের ভবিষ্যৎ ভোট নিশ্চিত করবে।
প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত এক শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র-কাউন্সিলর এবং পাঁচ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শপথ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত। জনগণের সেবা যদি আপনারা নিশ্চিত করতে পারেন, ভবিষ্যতে আপনাদের ভোটের কোনো চিন্তা থাকবে না। মানুষই আপনাদের ওপর আস্থা রাখবে, বিশ্বাস রাখবে।’
স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিদের জনকল্যাণে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস কোনোভাবেই হারাবেন না। তাই তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সেই অনুযায়ী মানুষের জন্য কাজ করুন।’
সরকার দেশের প্রতিটি এলাকার উন্নয়ন করেছে, তৃণমূলের মানুষকে ঘিরেই এই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি জনপ্রতিনিধিদের জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে কাজ করার, বর্তমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘ইতিমধ্যে দেশের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। যেটা আপনারা নিজেরাই দেখতে পাচ্ছেন। এই পরিবর্তন ধরে রেখে আরও উন্নতি করতে জনগণের কাছে দেওয়া ওয়াদা আপনাদের রক্ষা করতে হবে।’
জনগণকে উন্নত সেবা প্রদান, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলা সরকারের লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে তাঁরা ঘোষণা দিয়েছেন, ‘আমার গ্রাম, ‘আমার শহর।’ অর্থাৎ গ্রামের মানুষ সব নাগরিক সুবিধা পাবে।
২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্নাতক অর্জন কার্যকরের বিষয়টি উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এই প্রেক্ষাপটে আমি আপনাদের আন্তরিকতার সাথে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর, তাদের সেবা করার এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নের বর্তমান ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
দুর্নীতি, মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিদের সজাগ থাকার নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি, মাদক, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের পথ থেকে সবাই যেন দূরে থাকে, সেদিকে আপনাদের লক্ষ রাখতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত প্রথম নারী মেয়র তাহসিন বাহার এবং ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র একরামুল হককে শপথবাক্য পাঠ করান।
একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, সিরাজগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানদের শপথবাক্য পাঠ করান। পাঁচটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা হলেন কুড়িগ্রামের এ এন এম ওবায়দুর রহমান, ঠাকুরগাঁওয়ের আবদুল মজিদ, সিরাজগঞ্জের শামীম তালুকদার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিল্লাল মিয়া ও হবিগঞ্জের আলেয়া আক্তার।
পরে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সাধারণ ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ৪৪ জন কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলররা শপথ নেন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করান।
শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম।