ঢাকার বাজারে গত এক সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ২০-৩০ টাকা বেড়েছে | ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদের আগে হঠাৎ করেই মুরগির দাম বেড়ে গেছে। ব্রয়লার ও সোনালি উভয় ধরনের মুরগির দামই বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, বাজারে সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারিরা মুরগির দাম বাড়িয়েছেন। এদিকে বাজারে গরুর মাংসের দামও এখন চড়া। আর চাল, ডাল, আটা, ময়দা ও সয়াবিনের মতো নিত্যপণ্যগুলোর দাম উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল আছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মালিবাগ, মগবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৩০-২৪০ টাকা, আর সোনালি মুরগি ৩৩০-৩৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক সপ্তাহে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। আর প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ২০-৩০ টাকা বেড়েছে।

মগবাজারের মুরগি বিক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, ঈদ উপলক্ষে মুরগির চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে খামারিরা দাম বাড়িয়ে নিচ্ছেন। তাতে মুরগির দাম বেড়েছে।

প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, মুরগির দাম যে বাড়বে, তা আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। কারণ, খামারিদের চড়া দামে বাচ্চা কিনতে হচ্ছে। বাচ্চার বাজারে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। মুরগির খাবার ও ওষুধের দামও বাড়তি। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচের প্রভাব পড়েছে বাজারে।

এদিকে বাজারে গরুর মাংসের দামও চড়া। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দু-এক জায়গায় তো ৮০০ টাকা কেজিও দেখা গেছে। খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা।

মাছের বাজার নতুন করে চড়া না হলেও এখনো বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি চাষের তেলাপিয়া ও পাঙাশ আকারভেদে ২০০-২৫০ টাকা, কই মাছ ২৫০-৩০০ টাকা আর রুই ৩০০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রাকৃতিক উৎস থেকে পাওয়া মাছের দাম অনেক বেশি।

গত ১৫ মার্চ মুরগিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকারি সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। কিন্তু তিন সপ্তাহ পরও দর বেঁধে দেওয়ার কোনো প্রতিফলন নেই বাজারে। নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশিতেই বিক্রি হচ্ছে পণ্যগুলো।

মালিবাগ বাজারে ক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, রমজান মাসজুড়ে মাছ ও মাংস বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে। ঈদের আগে মাংসের দাম আবার বাড়ল। বাজার করতে গেলে তাল পাওয়া যায় না।

পেঁয়াজের দাম কমেছে। কেজি প্রতি দাম ৫০ টাকার আশপাশে। অন্যদিকে আলুর দাম বাড়তি। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা। ভালো মানের আলু কোথাও কোথাও ৫০ টাকা কেজি চাওয়া হয়।

সবজির দাম বেশ কমেছে। ৪০-৬০ টাকা কেজিতেই বেশির ভাগ সবজি কেনা যায় এখন। মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৪০-৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা ও টমেটো ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঈদ সামনে রেখে এবার বাজারে চিনির দামে অস্থিরতা নেই। প্রতি কেজি খোলা চিনি ১৪০ টাকার ওপরে। সেমাইয়ের বাজারও গতবারের মতোই বলে জানান ব্যবসায়ীরা।