র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার কেএনএফ নেতা চেওসিম বম | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি বান্দরবান: বান্দরবান জেলা শহরতলি শ্যারণপাড়া থেকে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) এক নেতাকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে। তাঁর নাম চেওসিম বম (৫৫)। রোববার বেলা সাড়ে তিনটায় এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৫–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন এই তথ্য জানিয়েছেন।
জেলা পরিষদের মিলনায়তনে আয়োজিত র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গতকাল শনিবার রাতে চেওসিম বমকে শ্যারণপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি কেএনএফের বান্দরবান জেলার প্রধান সমন্বয়কারী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কেএনএফ প্রধান নাথান বমের ঘনিষ্ঠদের একজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বম জনগোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন নাগরিক বলেছেন, চেওসিম বমের শ্যারণপাড়ার বাড়িতে কেএনএফ প্রধান নাথান বমের সঙ্গে জঙ্গিগোষ্ঠী জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়ার প্রধান সমন্বয়কারী শামীম মাহফুজের বৈঠক হয়েছিল। ২০২১ সালের শেষে ও ২০২২ সালের প্রথম দিকে এমন বৈঠক হয়। কারও কারও মতে তাঁর বাড়িতেই কেএনএফের সঙ্গে জঙ্গিগোষ্ঠী শারক্কীয়ার চু্ক্তি হয়েছিল। মাসিক তিন লাখ টাকার চুক্তিতে জঙ্গিদের কেএনএফ সদস্যরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল।
কেএনএফের শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তারের পর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে র্যাবের সংবাদ সম্মেলন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমার নেতৃত্বে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা’ কমিটি গঠন করা হয় গত বছরের মে মাসে। ওই কমিটির সঙ্গে গত ৫ মার্চ দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয় বেথেল পাড়ায়। শান্তি আলোচনার মধ্যেই ২ এপ্রিল বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে ও পরদিন ৩ এপ্রিল থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ঝটিকা আক্রমণ চালিয়ে ১৭ লাখ টাকা, দুটি লাইট মেশিনগানসহ (এলএমজি) ১৪টি অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায় কেএনএফ সদস্যরা। পাশাপাশি সোনালী ব্যাংক রুমা শাখার ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা। পরপর দুই উপজেলায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পর এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।
কেএনএফ ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে তৎপরতা শুরু করে। পাহাড়ে তাদের আস্তানায় সমতলের নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়ার সদস্যরা সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এর আগেও গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। সেই আস্তানায় গত বছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালিয়ে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়া ও কেএনএফের বেশ কিছু সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।