রুয়েটের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম সেখ ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. সেলিম হোসেন (ডানে) | ছবি: সংগৃহীত |
প্রতিনিধি
নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে সরকারের ১ কোটি ২৬ লাখ টাকার ক্ষতি করার অভিযোগে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সাবেক উপাচার্য মো. রফিকুল ইসলাম সেখ ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. সেলিম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।আজ বুধবার দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় রাজশাহীতে মামলাটি করেন। দুদকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। রফিকুল ইসলাম ও সেলিম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। সেলিম হোসেন বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অসৎ উদ্দেশ্যে নিজেরা লাভবান হয়ে অন্যদের লাভবান করতে অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় বেশি নম্বর দিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ‘সেকশন অফিসার’ পদে ৬ জনের জায়গায় ১৩ জনকে নিয়োগ, শূন্য পদ না থাকা সত্ত্বেও ‘সহকারী লাইব্রেরিয়ান’ পদের বিপরীতে ‘জুনিয়র সেকশন অফিসার’ পদে নিয়োগ, উপাচার্যের পিএ পদে দুজনের জায়গায় তিনজনকে, ‘ডেটা এন্ট্রি অপারেটর’ পদে একজনের জায়গায় দুজন, ‘মালি’ পদে তিনজনের জায়গায় সাতজন, গাড়িচালক পদে একজনের জায়গায় তিনজন ও ‘সহকারী কুক’ পদে তিনজনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাঁচজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, অতিরিক্ত নিয়োগ পাওয়া ১৭ জন ২০২১ সালের জুন থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত বেতন–ভাতা বাবদ সরকারের মোট ১ কোটি ২৬ লাখ ১২ হাজার ১০৯ টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধন করায় দণ্ডবিধি ৪০৯/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সানের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।
মামলা ও অভিযোগের বিষয়ে সাবেক উপাচার্য রফিকুল ইসলাম শেখের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের মে মাসে রুয়েটে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। তখন লিখিত পরীক্ষায় সপ্তম হয়েও নিয়োগ পান তৎকালীন উপাচার্যের শ্যালক সোহেল। শুধু সোহেল একা নন, উপাচার্যের আপন ভাই, ফুফাতো ভাই, শ্যালিকা, চাচাতো বোন, গৃহকর্মী, তাঁর স্বামীসহ আত্মীয়স্বজন অনেকে চাকরি পান। লিখিত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েও তাঁরা চাকরি পান। এ জন্য নম্বরপত্রে কাটাকাটিও (টেম্পারিং) করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্তে এসব অনিয়ম উঠে আসে। পরে ইউজিসির সুপারিশের ভিত্তিতে দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক আমিনুল ইসলাম গত বছরের ২৮ মার্চ অনুসন্ধান শুরু করেন। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে গত জানুয়ারিতে মামলার অনুমোদন চান। কয়েক দিন আগে দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্ত বিভাগ থেকে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়।