ফিফটি তুলে নেওয়ার পথে রেকর্ডও গড়েন কোহলি | আইপিএল |
খেলা ডেস্ক: আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে ভালো শুরু পেয়েছিলেন বিরাট কোহলি। কিন্তু ২০ বলে ২১ রান করে আউট হয়ে যান। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আজ পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে চওড়া হয়ে উঠেছিল কোহলির ব্যাট। রান তাড়ায় নেমে কোহলির ব্যাটের এমন রূপ অবশ্য অপরিচিত কিছু নয়। আজও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর জয়ে বেশ বড় ভূমিকা রাখল তাঁর ব্যাট।
৪৯ বলে ৭৭ রান প্রথমে ভূমিকা রাখেন কোহলি, এরপর দলের জয় নিশ্চিত করেন দীনেশ কার্তিক। পাঞ্জাবের ছুড়ে দেওয়া ১৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জিতেছে বেঙ্গালুরু। এবার আইপিএলে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম জয় পেল বেঙ্গালুরু।
পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ২ উইকেটে ৫০ তুলেছিল বেঙ্গালুরু। এর মধ্যে ওপেনার কোহলির একার অবদানই ৩৫। তৃতীয় ওভারে ফাফ ডু প্লেসি ও পঞ্চম ওভারে ক্যামেরন গ্রিনকে হারিয়ে একটু চাপেও ছিল বেঙ্গালুরু। দুটি উইকেটই নেন পাঞ্জাবের প্রোটিয়া পেসার কাগিসো রাবাদা। রজত পাতিদারের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৩৫ বলে ৪৩ রানের জুটিতে চাপটা কাটিয়ে ওঠেন কোহলি। এ পথে ৯.৩ ওভারে সেই রাবাদার বলেই সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি তুলে নেওয়ার সঙ্গে একটি রেকর্ডও গড়েন কোহলি। টি-টোয়েন্টিতে এটি কোহলির শততম পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস। প্রথম ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে রেকর্ডটি গড়েন তিনি।
জয়ের জন্য শেষ ১০ ওভারে ৯২ রান দরকার ছিল বেঙ্গালুরুর। পরের পাঁচ ওভারের মধ্যে পাতিদার ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকেও হারায় বেঙ্গালুরু। ১৮ বলে ১৮ রান করে আউট হন পাতিদার। ১১তম ওভারে তিনি আউট হওয়ার এক ওভার পরই পাঞ্জাবের স্পিনার হরপ্রীত ব্রারের বলে প্লেড-অন হয়ে বোল্ড হন ম্যাক্সওয়েল (৩)। পাতিদারের উইকেটও নেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
জয়ের জন্য শেষ ৫ ওভারে ৫৯ রান প্রয়োজন ছিল বেঙ্গালুরুর। তখন ৪৪ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত থাকা কোহলি চাপ বাড়াতে শুরু করেন পাঞ্জাবের বোলারদের ওপর। হর্ষল প্যাটেলের করা পরের ওভারে (১৬তম) দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে দুটি চার মারেন কোহলি। কিন্তু ওই ওভারের শেষ বলে স্ল্যাশ করতে গিয়ে থার্ড ম্যানে কোহলি ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নীরব হয়ে আসে গ্যালারি। ২ ছক্কা ও ১১ চারে ইনিংসটি সাজান কোহলি। জয়ের জন্য শেষ ৪ ওভারে প্রয়োজন ৪৭।
১৭তম ওভারের প্রথম বলে অনুজ রাওয়াত আউট হওয়ার পর বেঙ্গালুরুর ‘ইমপ্যাক্ট সাব’ হিসেবে নামেন এম কে লোমরোর। সে ওভারে লোমরোর ও দীনেশ কার্তিক মিলে ১১ রান তুলে সমীকরণটা ১৮ বলে ৩৬ রানে নামিয়ে আনেন। ১৮তম ওভারে এসেছে ১৩ রান। অর্থাৎ জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে দরকার ২৩। ক্রিজে কার্তিক ও লোমরোর।
হর্ষল প্যাটেলের করা ১৯তম ওভার থেকেও ১৩ রান নেন কার্তিক-লোমরোর জুটি। সেখানে এক ছক্কা ও চার এসেছে কার্তিকের ব্যাট থেকে। শেষ ওভারে ১০ রানের সমীকরণে নেমে আসে ম্যাচ। অর্শদীপ সিংয়ের প্রথম বলেই ছক্কা মেরে ম্যাচটা জেতা স্রেফ সময়ের ব্যাপারে পরিণত করেন কার্তিক। পরের বলটি ওয়াইড এবং তার পরের বলে চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেন কার্তিক। ২ ছক্কা ও ৩ চারে ১০ বলে ২৮ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ৮ বলে ১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন মহীপাল লোমরোর। ১৮ বলে ৪৮ রানের দারুণ ম্যাচ জেতানো জুটি গড়েন দুজন।
টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা পাঞ্জাব এগিয়েছে ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও মিডল অর্ডারে সবার ছোট ছোট অবদানে। ৩৭ বলে ৪৫ রান করেন ধাওয়ান। ৮ বলে ২১ রানে অপরাজিত ছিলেন শশাঙ্ক সিং। এ ছাড়া স্যাম কারেন খেলেন ২৩ রানের ইনিংস। বেঙ্গালুরুর হয়ে ২টি করে উইকেট নেন ম্যাক্সওয়েল ও মোহাম্মদ সিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাঞ্জাব কিংস: ২০ ওভারে ১৭৬/৬ (ধাওয়ান ৪৫, জীতেশ ২৭, প্রভিষমান ২৫, কারেন ২৩, শশাঙ্ক ২১*, লিভিংস্টোন ১৭; সিরাজ ২/২৬, ম্যাক্সওয়েল ২/২৯, আলজারি ১/৪৩, দয়াল ১/২৩)।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু: ১৯.২ ওভারে ১৭৮/৬ (কোহলি ৭৭, কার্তিক ২৮*, রজত ১৮, লোমরোর ১৭*; হরপ্রীত ২/১৩, রাবাদা ২/২৩, কারেন ১/৩০, হর্ষল ১/৪৫)।
ফল: বেঙ্গালুরু ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: বিরাট কোহলি (রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু)