প্রতিনিধি চাঁদপুর: রমজান উপলক্ষে কেনা পণ্য এক টাকা মুনাফায় বিক্রি করছেন চাঁদপুরের এক ব্যবসায়ী। এমন আয়োজন চলবে পুরো রমজান মাসজুড়ে। এমন উদ্যোগ গ্রহণকারী ব্যবসায়ী হলেন শাহ আলম। তিনি ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার চরকুমিরা তালতলা গ্রামের বাসিন্দা।
নিজ এলাকায় বছরজুড়ে শাহ আলম স্টোরে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বিক্রি করেন। কিন্তু রমজান মাস এলেই ভিন্ন কক্ষে তিনি এক থেকে দেড় মাস বিক্রি করেন রোজাদারের প্রয়োজনীয় ইফতারসহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী। বিক্রিতেও তিনি ব্যতিক্রম। কেনা মূল্য থেকে অতিরিক্ত ১ টাকা লাভে বিক্রি করেন প্রতি কেজি পণ্য। এটি রমজান উপলক্ষে দরিদ্রসহ সকল মানুষের জন্য তাঁর বিশেষ আয়োজন।
সকাল থেকেই তিনি দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে পরিচালনা করেন। রমজান উপলক্ষে বিশেষ আয়োজনে নিজে এবং একজন কর্মচারী নিয়ে কাজে ব্যস্ত থাকেন তিনি। ইতোমধ্যে ওই দোকানে ইফতারি সামগ্রী সাজিয়ে রেখেছেন।
এই ব্যবসায়ী মঙ্গলবার কেনা মূল্যের চাইতে ১ টাকা লাভে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি করছেন ৯৯ টাকা, খেসারি ১০৯ টাকা, চিড়া ৫৬ টাকা, চিনি ১৩৯ টাকা, বেসন ৮১ টাকা, মুড়ি ৬৩ টাকা, খেজুর দুই ধরনের একটি প্রতিকেজি ২৫৮ টাকা এবং অপরটি প্রতিকেজি ২৫৮ টাকা। ভোজ্য তেল (সয়াবিন) প্রতি লিটার বিক্রি করেন ১৪০ টাকা।
ওই গ্রামের বাসিন্দা ও পণ্য কিনতে আসা আহসান উল্লাহ খান বলেন, ২০২৩ সালে রমজানের আগ থেকে শাহ আলম এই উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁর উদ্যোগকে আমরা সবাই স্বাগত জানিয়েছি। এখন রমজানের সব পণ্য সামগ্রী তাঁর কাছ থেকে কিনি। কারণ বাজারে দাম বেশি এবং আসা-যাওয়ায় সময় ব্যয় করতে হয়।
ওই এলাকার রহিম বেপারী বলেন, শাহ আলম ১ টাকা লাভে বিক্রির বিষয়টি সবদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে গরিব লোকজন তার দোকানে চলে আসে। আমরা সকলেই এখন উপকৃত হচ্ছি।
শাহ আলমের পাশের ওষুধ ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম বলেন, শাহ আলম ভাই যে উদ্যোগ নিয়েছেন এটি বিরল। শুধুমাত্র কয়েকটি আরব দেশের কথা শুনেছি মুনাফা ছাড়া রমজানে পণ্য বিক্রি করেন। আমার মনে হয় তার এই ধরনের উদ্যোগ দেশের সব মানুষের কাছে উদাহরণ। সাধারণ মানুষের কষ্ট লাগবে মুনাফা কমিয়ে বড় ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসা উচিত।
ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, আমি অনেক বছর ধরে ব্যবসা করি। গত বছর চিন্তা করলাম এলাকার মেহনতী মানুষের জন্য কিছু করি। ওই করতে গিয়ে উদ্যোগ নিলাম রমজান উপলক্ষে আমি ১ টাকা লাভে পণ্য সামগ্রী বিক্রি করব। এটি করতে গিয়ে গত বছর অনেক বিক্রি হয়েছে এবং এই বছরও মানুষ পণ্য সামগ্রী ক্রয় করে উপকৃত হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। আশাকরি যারা শহর ও গ্রামে বড় ব্যবসায়ী আছেন, তারাও যেন রমজান উপলক্ষে ১ টাকা লাভে পণ্য বিক্রি করেন। তাহলে গরিব দু:খী মানুষ এই রমজানে পণ্য কিনে তৃপ্তিমত খেতে পারবেন।