১২পি/পনস–ব্রুকস |ছবি : নাসার সৌজন্যে

পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক:  মাউন্ট এভারেস্টের সমান বিশাল একটি ধূমকেতু আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পৃথিবীর খুব কাছে আসছে। প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে প্রথমবারের মতো এটি পৃথিবীর কাছাকাছি আসবে। এটি খালি চোখেও দেখা যেতে পারে। ওই ধূমকেতুটির নাম ১২পি/পনস–ব্রুকস। একে অনেক সময় শয়তান (ডেভিল) ধূমকেতু হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।

গত বছর এ ধূমকেতুর পৃষ্ঠে শিং আকৃতির বরফ ও গ্যাসের বিস্ফোরণের কারণে এর এ নামকরণ করা হয়। আগামী ২১ এপ্রিল ধূমকেতুটি সূর্যের খুব কাছাকাছি পৌঁছাবে। এর কাছাকাছি সময় থেকেই এটি আকাশে আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠতে শুরু করেছে।

ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জ্যোতির্বিদেরা বাইনোকুলার বা দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে এটি দেখতে পাচ্ছেন এবং এর দারুণ ছবি তুলছেন। আগামী ২ জুন এটি পৃথিবীর খুব কাছাকাছি আসবে। এ সময় পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব হবে ১৪ কোটি ৪০ লাখ মাইল।

১২পি/পনস-ব্রুকস ধূমকেতুটি নির্দিষ্ট সময় পরপর পৃথিবীর কাছাকাছি আসে। সূর্যকে প্রদক্ষিণ করা ধূমকেতুটি প্রতি ৭০ বছর পরপর সৌরজগতের ভেতরে চলে আসে। ১৮১২ সালে প্রথম ধূমকেতুটি আবিষ্কার করেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী জ্যঁ-লুইস পনস। এরপর ১৮৮৩ সালে এটি আবার দেখতে পান জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম রবার্ট ব্রুকস। তাঁদের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়। এর আগে সর্বশেষ ১৯৫৪ সালে ধূমকেতুটি সূর্যের কাছাকাছি এসেছিল। এরপর ২০৯৫ সালে এটি আবার সূর্যের কাছাকাছি আসতে পারে।

ধূমকেতুটি ২১ এপ্রিল নাগাদ তাওরাস নক্ষত্রপুঞ্জে হাজির হবে। তখন উত্তর গোলার্ধ থেকে সন্ধ্যায় সবচেয়ে ভালোভাবে এটি দৃশ্যমান হবে। এ সময় এটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিগন্তের কাছাকাছি প্রদর্শিত হবে।

এপ্রিল মাসজুড়ে সূর্যের খুব কাছাকাছি যেতে থাকায় এটি আরও উজ্জ্বল দেখাবে। তবে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির উপনির্বাহী পরিচালক রবার্ট ম্যাসি বলেন, ‘ছবিতে যত উজ্জ্বল দেখা যায়, এটি বাস্তবে ততটা উজ্জ্বল না দেখাতেও পারে। আকাশে চাঁদ না থাকলে তবে এটি খালি চোখে দেখা যেতে পারে। আলোক দূষণ না থাকলে বা আবহাওয়া পরিষ্কার থাকলে তবে এটি দেখার সুযোগ মিলতে পারে। তবে দূরবীক্ষণ যন্ত্র থাকলে এটি দেখতে সুবিধা হবে।

৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে সূর্যগ্রহণ থাকায় ওই সময় এটি সেখান থেকে দেখা যেতে পারে। আগ্রহীরা মোবাইল অ্যাপ থেকেও দেখে নিতে পারেন। অন্য ধূমকেতুর মতোই ১২পি/পনস-ব্রুকস মূলত ধূলি, বরফ ও ধাতব পদার্থের তৈরি। সূর্যের কাছাকাছি গেলে তাপে সেখান থেকে গ্যাস বের হয় এবং ধূলিকণা মিশে ধূমকেতুর বায়ুমণ্ডল সৃষ্টি করে। এ ছাড়া সৌরবায়ুর কারণে ধূমকেতুর একটি লেজ সৃষ্টি হয়। ২১ মাইল ব্যাসার্ধের এই ধূমকেতুতে অসাধারণ কিছু উপাদানের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে জ্যোতির্বিদদের আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।