জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ | ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সোমালিয়ার উপকূলে ২৩ নাবিকসহ জিম্মি এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ থেকে পাঁচ থেকে সাত নটিক্যাল মাইল দূরে গতকাল শনিবারও অবস্থান করছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ। আবার জিম্মি জাহাজ থেকে স্থলভাগে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে খবর দিয়েছে বিবিসি সোমালি।

এমন পরিস্থিতিতে জলে ও স্থলে দুই দিক থেকে জলদস্যুদের ওপর দৃশ্যত চাপ বাড়ছে বলে মনে করেন অভিজ্ঞ নাবিকেরা। এই চাপে জিম্মিদের মুক্ত করতে জলদস্যুরা দ্রুত সমাধানে আসতে পারে বলে ধারণা করছেন কেউ কেউ।

নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা এই ঘটনার শুরু থেকে খোঁজখবর রাখছেন। জানতে চাইলে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এটা ঠিক, জলদস্যুদের ওপর একটা চাপ তৈরি হয়েছে। সাধারণত এ ধরনের চাপ তৈরি হলে সমাধানও তাড়াতাড়ি হয়। যদিও জলে-স্থলে এই চাপ দস্যুরা কীভাবে নিচ্ছে, তার ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করে।

ভারত মহাসাগর থেকে ১২ মার্চ ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ার দস্যুরা। জাহাজটি এখন সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জেফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল (১ নটিক্যাল মাইল= ১ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার) দূরে নোঙর করে রেখেছে দস্যুরা। জাহাজটি ছিনতাইয়ের ৯ দিনের মাথায় দস্যুরা মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করা নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।

জাহাজটি জিম্মি করার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে নজরে রাখে। তবে বৃহস্পতিবার রাতে সংস্থাটি এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে জানায়, সোমালিয়া এলাকায় তারা যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। ওই পোস্টে যুক্ত করা ভিডিও চিত্র ও স্থিরচিত্রে যুদ্ধজাহাজ থেকে একটি হেলিকপ্টার জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের ওপর দিয়ে উড়ে যেতে দেখা যায়। একটি ছবিতে দেখা যায়, ইইউ নৌবাহিনীর দুজন সদস্য যুদ্ধজাহাজটি থেকে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের দিকে নজর রাখছেন।

ইইউ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করলেও কোনো অভিযানের বিষয়ে জানায়নি। এর আগে তারা জাহাজটি উদ্ধারে অভিযানের কথা জানালেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্মতি দেওয়া হয়নি।

আবার বিবিসি সোমালি শুক্রবার পান্টল্যান্ডের নুগাল পুলিশের কমান্ডার মোহাম্মদ আলী আহমেদ মারদুউফের বরাত দিয়ে স্থলভাগে অভিযানের সংবাদ দিয়েছে। বিবিসি সোমালিকে মারদুউফ বলেছেন, ‘আমরা এখন উপকূলে আছি। পরিকল্পনা হলো, জলদস্যুরা যাতে সংগঠিত হতে না পারে এবং আবদুল্লাহ জাহাজে যেসব জলদস্যু আছে, তারা যেন উপকূল থেকে আর সাহায্য না পায়। অন্যদিকে সমুদ্রের অংশে তারা আন্তর্জাতিক বাহিনীর ঘেরাওয়ের মধ্যে আছে। তাই সমুদ্রের দিক থেকেও তারা বিচ্ছিন্ন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘পান্টল্যান্ড পুলিশ কী করছে, তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে আমাদের জানা নেই। আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীকে কোনো অভিযানের সম্মতিও দিইনি আমরা। আমরা শুধু আমাদের নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছি।’