বর্তমানে হিজাব পরিধানকারী মুসলিম নারীদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। হিজাব যাঁরা পরেন, তাঁদের চুল দীর্ঘ সময় ধরে ঢাকা থাকে। তাই সূর্যের আলো, ধুলাময়লা বা অন্যান্য দূষণ থেকে । এ জন্য অনেকেই ভাবেন, হিজাব পরিহিত নারীদের চুলে ও মাথার ত্বকে তেমন কোনো সমস্যাই হয় না। যদিও সেটা পুরোপুরি ঠিক নয়। তাঁদের চুলও খুশকি, চুল পড়া, হেয়ার ড্যামেজ, ব্রেকেজের মতো ঝামেলার ঊর্ধ্বে নয়।

হিজাবি নারীদের চুলের বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। মডেল: আফসারা রিমি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ফাহমিদা শিকদার:  লম্বা সময় ধরে হিজাব পরে থাকার ফলে মাথায় ঠিকমতো বাতাস প্রবেশ করতে পারে না। এতে এর ত্বক ঘেমে যায়। অন্যদিকে আমাদের মাথার ত্বক থেকে প্রাকৃতিকভাবে কিছু তেল নিঃসৃত হয়। ঘাম আর তেল মিলেমিশে একাকার হয়ে মাথার ত্বককে চটচটে করে তোলে। এতে চুলকানি, র‍্যাশ, খুশকি ইত্যাদির মতো হাজারও সমস্যা দেখা দেয়। এ জন্য হিজাবি নারীদের চুলের বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। 

অনেকেই আছেন, যাঁরা গোসলের পর চুল না শুকিয়ে হিজাব পরে ফেলেন। এটা কিছুতেই করা যাবে না। ফলে চুলে দুর্গন্ধ ও খুশকি হয়। এমনকি উকুন হওয়ার জোরালো আশঙ্কাও থাকে। হিজাব পরার আগে পানি বা ঘামে ভেজা চুল ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। বাইরে থেকে ফিরে হিজাব খুলে একই কাজ করতে হবে। চুল শুকানোর জন্য সবচেয়ে ভালো ফ্যানের বাতাস। আর বেশি তাড়া থাকলে হেয়ারড্রায়ারের কোল্ড সেটিং ব্যবহার করুন। কারণ, হট সেটিংয়ের গরম বাতাসে চুলের ক্ষতি হতে পারে। যাঁরা হিজাব পরেন না, তাঁদের জন্যও এটি প্রযোজ্য।

হিজাব পরার আগে চুল খুব হালকা করে বেঁধে নেওয়া উচিত। বেশি শক্ত করে চুল বাঁধলে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়। এতে চুল পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। চুল বাঁধতে স্ক্রাঞ্চি ব্যবহার করুন। এটি বেশ কোমল এবং কোনো ধরনের ড্যামেজ করে না। লম্বা চুল বেণি, পনিটেইল বা হালকা খোঁপা করলেই চলবে।

চুলের সুরক্ষায় বাতাস চলাচল করতে পারে এমন কাপড়ের হিজাব ব্যবহার করতে হবে । মডেল: আফসারা রিমি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

চুলের সুরক্ষায় এমন কাপড়ের হিজাব ব্যবহার করতে হবে, যাতে চুলের ভেতর বাতাস তথা অক্সিজেন প্রবেশ করতে পারে। সেই সঙ্গে ঘাম শোষণ করার ক্ষমতাও থাকতে হবে। এ জন্য বেছে নিন সুতি, জার্সি, ক্রেপ, সিল্কের হিজাব। এ ধরনের হিজাব অতিরিক্ত ঘাম শুষে নিয়ে মাথার ত্বককে ফ্রেশ রাখে।

হিজাব নিয়মিত ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এতে মাথার ত্বকের ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ এড়ানো যাবে, আর কখনো কোনোভাবেই অন্যের হিজাব ব্যবহার করা যাবে না।

চুল নিয়মিত শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। কারণ, হিজাব পরলে ঘাম আর তেলের জন্য মাথার ত্বকে খুশকি হয়ে থাকে। তাই সপ্তাহে অন্তত তিন দিন ভালো মানের শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। বাজারে এখন হিজাবিদের জন্য বিশেষ ধরনের শ্যাম্পু পাওয়া যায়। সম্প্রতি বিশ্বের বিখ্যাত হেয়ার কেয়ার ব্র্যান্ড ক্লিয়ার বাজারে এনেছে তাদের নতুন প্রোডাক্ট নিউট্রিয়াম টেনযুক্ত শ্যাম্পু ‘হিজাব পিওর’। 

এর ট্রিপল অ্যান্টিড্যানড্রাফ টেকনোলজি খুশকি থেকে মাথার ত্বকের সব তেল চিটচিটে ময়লা পরিষ্কার করে দীর্ঘস্থায়ী সজীবতা ও সুরক্ষা দিয়ে থাকে। আর এতে রয়েছে টি ট্রি অয়েল, যা একটি অ্যান্টি-ইনফেকশন, অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান; এটি মাথার ত্বককে খুশকি এবং যেকোনো ধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

চুল নিয়মিত শ্যাম্পু করতে হবে। মডেল: আফসারা রিমি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

এই শ্যাম্পুতে আরও আছে সোডিয়াম ক্লোরাইড অর্থাৎ লবণ, যা মাথার ত্বকের মৃতকোষ পরিষ্কারে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া আছে সোডিয়াম স্যালিসাইলেট, যা মাথার ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতার সমস্যা দূর করে, এর ময়শ্চার লেভেল ঠিক রাখে। এ শ্যাম্পুতে আরও আছে শিয়া সিড অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল, মাইসিলার ওয়াটার ও মিন্ট। 

এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলো খুশকি তাড়ানোর পাশাপাশি চুলে পুষ্টি জোগায়। প্রোটিনসমৃদ্ধ শিয়া সিড অয়েল মাথার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রেখে চুলকে কোমল ও মসৃণ করে এবং এর বৃদ্ধির গতি বাড়িয়ে প্রাকৃতিক ভলিউম দেয়। তাই খুশকি প্রতিরোধ ও প্রতিকার এবং চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় নির্দ্বিধায় বেছে নেওয়া যেতে পারে নতুন ক্লিয়ার হিজাব পিওর অ্যান্টিড্যানড্রাফ ও অ্যান্টিলিম্প শ্যাম্পু ।