‘গণহত্যার কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রী’ শিরোনামে অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকেরা। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় গণহত্যা দিবসে স্মরণ করা হলো রাজধানীর ফার্মগেটে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ব্যারিকেড তৈরির ঐতিহাসিক ঘটনা। ‘গণহত্যার কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রী’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত এ আয়োজন থেকে মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চূড়ান্তকরণ এবং প্রথম ব্যারিকেড তৈরির ঘটনার স্মরণে রাজধানীর ফার্মগেটে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির দাবি জানানো হয়।

রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আজ সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় এ আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানের শুরুতে দেখানো হয় একটি প্রামাণ্যচিত্র। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে রুখতে ফার্মগেট এলাকায় যে প্রথম ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছিল, ঐতিহাসিক সে ঘটনার ওপর নির্মিত হয়েছে এ প্রামাণ্যচিত্র। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ছিলেন তখন একজন তরুণ যোদ্ধা। তাঁর নেতৃত্বে সেদিন গাছ কেটে ব্যারিকেড তৈরি করে জাহাঙ্গীর গেট দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গাড়ি বের হওয়ার পথ কিছুক্ষণের জন্য আটকে দেওয়া সম্ভব হয়েছিল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের ২৫ বছর ধরে দেশ শাসনে অনেক স্মৃতি মুছে ফেলা হয়েছে। এমনকি তখন এমনও সংসদ সদস্য ছিল সে সময় যারা সংসদে বসে গর্ব করে বলত তারা রাজাকার।

আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি মঞ্চে তাঁর সঙ্গে ডেকে নেন ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে সেদিন ফার্মগেটে ব্যারিকেড তৈরিতে এগিয়ে আসা সব সহযোগীকে। তিনি বলেন, গাছের গুঁড়ির ব্যারিকেড দিয়ে ২০ মিনিট ধরে আটকে রাখা সম্ভব হয়েছিল এত বড় সামরিক বাহিনীকে, সেটা কম কথা ছিল না। ইয়াহিয়া খান ঢাকার রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তার গাড়িতে জুতা স্যান্ডেল ছুড়ে দেওয়া হয়েছিল এই ফার্মগেটে। তাই ফার্মগেট অনেক ইতিহাসের সাক্ষী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সব আন্দোলনে জনগণকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন, আমরা সব সময় নিপীড়নের শিকার হয়েছি। একমাত্র বঙ্গবন্ধুর পক্ষেই সম্ভব হয়েছে নিরস্ত্র বাঙালিকে মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি যুদ্ধে বিজয়ী করা।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, সংসদ সদস্য ও হা–মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ, অভিনেতা আলমগীর, সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল। বক্তাদের অনেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নামে একটি সড়কের নামকরণ করার দাবি জানান।