পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক: রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় হামলার ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চারজন সরাসরি হামলায় অংশ নিয়েছিলেন বলে তদন্ত কর্মকর্তাদের ভাষ্য। ইতিমধ্যে এই চারজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
গত শুক্রবার রাতে মস্কোর উত্তর–পশ্চিম প্রান্তের ক্রোকাস সিটি হলে হামলা করেন একদল বন্দুকধারী। রুশ কর্তৃপক্ষের দেওয়া শেষ হিসাব অনুযায়ী সেই হামলায় অন্তত ১৩৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত আরও শতাধিক।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মস্কো শহরতলির ওই হলে কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে সমবেত হয়েছিলেন হাজারো মানুষ। নির্বিচার গুলি চালানোসহ হল প্রাঙ্গণেও আগুন ধরিয়ে দেন হামলাকারীরা।
রুশ কর্তৃপক্ষ এর আগে জানিয়েছিল যে হামলার পর পালানোর সময় ইউক্রেন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে এই চার অস্ত্রধারীকে আটক করে তারা। এরপর সেখান থেকে তাঁদের আনা হয় মস্কোয়। রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি জানিয়েছে,এই চারজন সরাসরি হামলায় অংশ নিয়েছিলেন।
সন্দেহভাজন চার হামলাকারী হলেন দালের্দজন মিরজোয়েভ, সাইদআক্রামি রাচাবালিজোদা, শামসিদিন ফারিদুনি ও ফায়জভ মুহাম্মাদসোবির। আজ সোমবার মস্কোর একটি আদালতে তাঁদের হাজির করা হয়। চার হামলাকারীর বিরুদ্ধে আনা হয়েছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটনের অভিযোগ। ইতিমধ্যে মিরজোয়েভ ও সাইদআক্রামি তাঁদের দায় স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন আদালত।
ক্রোকাস কনসার্ট হল হামলায় অভিযুক্ত সাইদআক্রামি রাচাবালিজোদার জন্ম ১৯৯৪ সালে। তিনি রাশিয়ার নাগরিক। তবে রাশিয়ার কোন অঞ্চলে থাকেন, তা মনে করতে পারছেন না বলে আদালতকে জানিয়েছেন তিনি।
অভিযুক্ত শামসিদিন ফারিদুনি জানিয়েছেন যে তিনি ১৯৯৮ সালে তাজিকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আট বছর বয়সী একটি সন্তান আছে। তিনি রাশিয়ার পোদলস্ক শহরে একটি মাদুর তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। শামসিদিন ক্রাসনোগরস্কের বাসিন্দা হিসেবে নিবন্ধিত। এখানেই অবস্থান হামলার শিকার ক্রোকাস সিটি হলের।
অভিযুক্ত ফায়জভ মুহাম্মাদসোবিরের জন্ম ২০০৪ সালে। কিছুদিন ধরে তিনি বেকার ছিলেন। তবে বেকার হওয়ার আগে ইভানোকভ শহরে চুল কাটার দোকানে কাজ করতেন। এ শহরের বাসিন্দা হিসেবেই নিবন্ধিত তিনি। অপর হামলাকারী দালের্দজন মিরজোয়েভ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।
রাশিয়ায় অবস্থানের জন্য যেকোনো ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট শহরের নগর কর্তৃপক্ষের আওতায় নিবন্ধন নিতে হয়।
মস্কোর এই হামলার দায় স্বীকার করে গতকাল রোববার বিবৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তবে হামলার পরপরই আইএসের আফগানিস্তান শাখা আইএসকেপি এর দায় স্বীকার করে দাবি করে, মস্কোর ওই হলে হামলার পর তাদের যোদ্ধারা ঘাঁটিতে ফিরে এসেছেন। এদিকে রাশিয়া বলছে, এ হামলায় ইউক্রেন জড়িত। অবশ্য ইউক্রেন অভিযোগ অস্বীকার করেছে।