নেপালের মত ভুটান থেকেও বিদ্যুৎ আনতে চায় ঢাকা

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সোমবার বিকালে ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থাপনায় নেপালের মত ভুটান থেকেও জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে দেশটির রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের সঙ্গে আলোচনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

সোমবার ঢাকার একটি হোটেলে সফররত রাজার সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনার কথা মন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন।

বৈঠকের পর হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি আলোচনা হয়েছে, ভারত এ ক্ষেত্রে সহায়তা করবে। আমরা আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। দেশের উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে নেপাল থেকে ভারতের সঞ্চালন লাইন হয়ে আসা বিদ্যুৎ কিনতে যাচ্ছে সরকার।

নেপাল থেকে প্রাথমিকভাবে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এই পরিমাণ ৫০০ মেগাওয়াট করতে চায় সরকার।

একইভাবে ভুটান থেকেও বিদ্যুৎ আমদানির সম্ভাবনা নিয়ে সরকার কাজ করছে; ভুটানের রাজার সফর ঘিরে সেই আলোচনা জোরদার হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সোমবার সকালে ঢাকা পৌঁছান ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক এবং রানি জেৎসুন পেমা। বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।

দুপুরে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে বৈঠকের পর তিনটি সমঝোতা স্মারক ও একটি চুক্তি সই হয়।

এসব সমঝোতা স্মারকের আওতায় ভুটানের থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট করে দেবে বাংলাদেশ। কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য একটি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হবে।

এছাড়া আরেকটি সমঝোতা স্মারকের আওতায় ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা জোরদার করা হবে দুই দেশের মধ্যে।

আর সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আগে যে চুক্তি রয়েছে, সেটি আবার নবায়ন করেছে দুই দেশ।

রাজার সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে এই সফরে চুক্তি হচ্ছে না। ভারত যেভাবে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে সহায়তা করেছে, ভুটান থেকে আমদানির ক্ষেত্রেও ভারত সহায়তা করবে।

হাছান মাহমুদ বলেন, দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে ভুটানকে আবার বিবিআইএনে (বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপাল ইনিশিয়েটিভ) যোগদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে। রাজা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন। এয়ার-কানেক্টিভিটি বাড়ানোর বিষয়েও অনুরোধ জানিয়েছি।

মন্ত্রী বলেন, ঢাকা-থিম্পু এখন সপ্তাহে মাত্র দুটি ফ্লাইট আছে, এটা বাড়ানো প্রয়োজন, কারণ ভুটান অত্যন্ত সুন্দর দেশ, যে একবার গেছে, সে বারবার যেতে চায়। মানুষ যাতে সড়ক পথে গাড়ি নিয়ে যেতে পারে, সে নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমি কয়েকবার গেছি, বর্তমান রাজার বিবাহ উৎসবেও যোগ দিয়েছি। গত বছর তিনি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার সময় যাত্রাবিরতিতে আমি তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়েছিলাম।