সাদি মহম্মদ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বিনোদন ডেস্ক: বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ আর নেই। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মারা গেছেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সাদি মহম্মদের ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ জানান, আজ বুধবার তানপুরা নিয়ে সংগীত চর্চা করছিলেন তিনি। সন্ধ্যার পর হঠাৎ ঘরের দরজা বন্ধ দেখেন। কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক ভূঁইয়া বলেন, তাঁরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, শিল্পী সাদি মহম্মদের মৃত্যু আত্মহত্যাজনিত। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে।
ময়নাতদন্তের জন্য সাদি মহম্মদের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে বলে মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নূরজাহান রোডের বাসার তৃতীয় তলায় দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।
গত বছরের ৮ জুলাই মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ (৯৬) বার্ধক্যজনিত রোগে মারা যান। মা মারা যাওয়ার পর থেকে বিষণ্নতায় ভুগছিলেন শিল্পী সাদি মহম্মদ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিল্পীর এক ঘনিষ্ঠজন জানান, মা হারানোর বেদনা ভুলতে পারেননি। গতকাল সন্ধ্যার পরপরই তিনি নীরবে না–ফেরার দেশে পাড়ি দেন তিনি।
সাদি মহাম্মদ রবীন্দ্রসংগীতের ওপর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বিশ্বভারতীতে শান্তিদেব ঘোষ ও কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গান শিখেছেন তিনি।
২০০৭ সালে ‘আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে’ অ্যালবামের মাধ্যমে সাদি মহম্মদ সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তাঁর ‘শ্রাবণ আকাশে’ ও ২০১২ সালে তাঁর ‘সার্থক জনম আমার’ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। অসংখ্য রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে তাঁর কণ্ঠে। সঙ্গে আধুনিক গানও করেছেন তিনি।
সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১২ সালে তাঁকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করে চ্যানেল আই। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি থেকে পেয়েছেন রবীন্দ্র পুরস্কার।