সিরাজগঞ্জে ধানখেতে পুঁতে রাখা ছিল শিশুর লাশ

সানজিদা খাতুন | ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ধানখেতে পুঁতে রাখা অবস্থায় সানজিদা খাতুন (৯) নামের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ওলিদহ পশ্চিমপাড়া এলাকার একটি ধানখেত থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

মারা যাওয়া সানজিদা উল্লাপাড়া উপজেলার আমসড়া গ্রামের মো. শাহিনের মেয়ে। এ ঘটনায় শিশুটির সৎবাবা শরিফুল ইসলাম ও প্রতিবেশী হাসমত আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শরিফুল ওলিদহ গ্রামের মো. নুরালের ছেলে ও হাসমত একই গ্রামের আবু হানিফের ছেলে।

পুলিশ ও নিহত শিশুটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সানজিদার মা জরিনা খাতুন প্রথমে তাঁরা বাবা শাহিনকে বিয়ে করেছিলেন। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পর জরিনা শরিফুলকে বিয়ে করেন। জরিনা ছিলেন শরিফুলের চতুর্থ স্ত্রী। তাঁদের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে দেড় মাস আগে জরিনা শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। এরপর শরিফুল তাঁকে ফিরিয়ে আনতে অনেক চেষ্টা করেন। কিন্তু ফিরে না আসায় জরিনার প্রতিবেশী ভাই হাসমতের শরণাপন্ন হন তিনি।

 তখন এ বিষয়ে হাসমত আলী তাঁকে বলেন, সানজিদাকে অপহরণ করে তাঁর হাতে তুলে দিলেই শরিফুল তাঁর স্ত্রীকে ফেরত পাবেন। এমন অবস্থায় ১০ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে হাসমত ও শরিফুল সানজিদাকে অপহরণের চেষ্টা করেন। তাঁরা চিপসের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। সে সময় সানজিদা চিৎকার করলে তাকে গলাটিপে হত্যার পর কবরস্থানের জঙ্গলে মরদেহ ফেলে রেখে যান তাঁরা। পরে ওই রাতেই তাঁরা মরদেহটি পাশের একটি ধানখেতে পুঁতে রাখেন।

এদিকে অনেক খোঁজাখুঁজির পর সানজিদার সন্ধান না পেয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি তাঁর নানা জহুরুল ইসলাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি হওয়ার পর পুলিশ অনুসন্ধান চালিয়ে ওই দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেন তাঁরা। তাঁদের দেওয়া তথ্যমতে ধানখেতে পুঁতে রাখা অবস্থায় শিশু সানজিদার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পাঁচ দিন লাশটি মাটির নিচে থাকায় শরীরে পচন ধরেছে। এ কারণে শরীরের কোনো অংশে আঘাতের চিহ্ন শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে শিশুটির মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। ওই মামলায় আটক শরিফুল ও হাসমতকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ দুপুরে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।