আবারও আগুন-সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি: আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত মিডিয়া উপকমিটির পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন | ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন এলেই ‘বিএনপি–জামায়াতের’ নির্বাচনবিমুখ চরিত্রটি প্রকাশ হয়ে পড়ে বলে মন্তব্য করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটি অভিযোগ করে বলছে, বাংলাদেশ যখন নির্বাচনের পথে হাঁটছে, ঠিক সেই সময় আবারও আগুন-সন্ত্রাস ও খুনের রাজনীতির ঘৃণ্য চিত্র দেখাল বিএনপি।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির পক্ষ থেকে এই অভিযোগ করা হয়। আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত মিডিয়া উপকমিটির পক্ষ থেকে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মিডিয়া উপকমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ এ আরাফাত। তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার ঢাকার গোপীবাগে যশোর থেকে আসা বেনাপোল এক্সপ্রেস নাশকতার আগুনে জ্বলেছে। চারটি তাজা প্রাণ ঝরে গেছে। বেশ কয়েকজন দ্বগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গতকাল থেকে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের ২০টির বেশি ভোটকেন্দ্র আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে—এমন অভিযোগ করে মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, রাজবাড়ীর একটি স্কুলে পাহারায় থাকা গ্রাম পুলিশের একজন সদস্যকেও হত্যা করেছে তারা (বিএনপি–জামায়াত)। রামুতে রাখাইন মন্দিরে গতকাল মধ্যরাতে আগুন দিয়েছে। ডেমরা ও কুমিল্লায় দুটি বাসে আগুন দিয়েছে। ভোলায় বেসরকারি হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুর করেছে।

গত ২৮ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াতের নাশকতার চিত্রও সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে আজ পর্যন্ত ‘বিএনপি-জামায়াত’ ৬৫৮টির বেশি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ও যানবাহন ভাঙচুর করেছে। রেলে নাশকতার ঘটনা ঘটিয়েছে ২১টি। ১৭টি ট্রেনে আগুন দিয়েছে। এসব ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া এসব ঘটনায় ২০ জন বাসচালক ও হেলপার দগ্ধ হয়েছেন।

মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে চার শতাধিক বোমা বা ককটেল হামলা হয়েছে। এই সময় ১৫০ জন পুলিশ সদস্য আহত ও ১ পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। হামলা হয়েছে অর্ধশতাধিক সাংবাদিকের ওপর। আওয়ামী লীগের ছয়টি কার্যালয়ে হামলা করা হয়। খুলনায় আদালতের এজলাসকক্ষ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

নাশকতার ঘটনা ঘটাতে গিয়ে বিএনপির নেতা–কর্মীরা হাতেনাতে ধরা পড়েছেন বলেও উল্লেখ করেন মোহাম্মদ এ আরাফাত। তিনি বলেন, গত ৫ নভেম্বর উত্তরার আবদুল্লাহপুরে ককটেল বিস্ফোরণের সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি কাজী মোহাম্মদ হাসান। গত ২৪ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে রেলে হাতবোমা নিক্ষেপের সময় বিএনপি- জামায়াত সমর্থক জয়নাল আবেদিন, হাবিবুর রহমান ও মোহাম্মদ আরিফকে আটক করে রেলওয়ে পুলিশ।

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত মিডিয়া উপকমিটির এই সদস্যসচিব বলেন, বিএনপির এখনকার মূল কাজ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা। আর সে জন্যই এত কিছু।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম রাব্বানী, সাহাবুদ্দীন ফরায়েজী, আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আবদুল আউয়াল, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।