কুয়াশার সঙ্গে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশায় লাইট জ্বালিয়ে চলছে যান | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈশ্বরদী-বানেশ্বর ও ঈশ্বরদী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক সড়কে সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনা। গেল এক ১৫ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন অন্তত আট ও ২২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘন কুয়াশার কারণে শীত মৌসুমে দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়াও তীব্র গতি, ঝুকিপূর্ণ অতিক্রমের কারণে দুর্ঘটনা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
দুর্ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বেশির ভাগ দুর্ঘটনাই ঘটছে ভোরে বা সকালে, যখন কুয়াশা বেশি থাকে।
এর মধ্যে ঈশ্বরদীর পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলায় মৃত আত্মীয়কে দেখতে যাওয়ার পথে ঘন কুয়াশায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভটভটি উল্টে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। অপর দুর্ঘটনায় যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে বানেশ্বর-ঈশ্বরদী আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলার দক্ষিণ লালপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন একই এলাকার খায়েজ মোল্লার ছেলে চান্দু মোল্লা (৬২) ও তার স্ত্রী আরবি বেগম (৪৫)।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ঈশ্বরদী-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কের লালপুর গৌরীপুর নামক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটে একজনের।
দুর্ঘটনায় নিহত শামসুল আলম, ঈশ্বরদী পৌরসভার সাঁড়া গোপালপুর এলাকার মৃত আব্দুল গনির ছেলে এবং ঈশ্বরদী পৌর ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
অপর দুর্ঘটনায় ঘন কুয়াশায় যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে পাবনা—বনপাড়া সড়কে উপজেলার কদিমচিলান ইউনিয়নের গোধড়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে চারজনকে বনপাড়ার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
২০ জানুয়ারি ঈশ্বরদী উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অপর তিনজন। ওইদিন আটটার দিকে উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নে কোলেরকান্দি বটতলার কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে ঈশ্বরদী উপজেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আলতাব হোসেন বলেন, এ অঞ্চলে সন্ধ্যা থেকে ঘন কুয়াশা পড়ে। প্রায় দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা থাকে। ফলে অতি সাবধানতার সঙ্গে গাড়ি চালালেও দুর্ঘটনা ঘটে যায়। চালকদের কিছু করার থাকে না।
তবে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) পাবনা জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল মতীন খান বলেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অনিয়ন্ত্রিত গাড়ি চালানো, চালকদের অদক্ষতা, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, সড়ক নির্মাণে ত্রুটি ও ঝুঁকিপূর্ণ অতিক্রমের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে।
পাকশী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিষ কুমার স্যান্যাল জানান, ঘন কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। চালকদের সতর্কভাবে গাড়ি চালানো প্রয়োজন। কোনো কোনো চালক নিয়ম মানতে চান না। আমরা প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করি।