পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় |
প্রতিনিধি পাবনা: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক হাফিজা খাতুন বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির নির্বাচনে সহসভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভিসিসহ প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তা এশিয়াটিক সোসাইটিতে অবস্থান করায় পাবিপ্রবির সকল প্রশাসনিক কাজ বন্ধ রয়েছে।
সরজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, উপাচার্য হাফিজা খাতুন, উপ-উপাচার্য এস এম মোস্তফা কামাল, কোষাধ্যক্ষ কে এম সালাহউদ্দিন, রেজিস্ট্রার বিজন ব্রহ্ম, প্রক্টর কামাল হোসেন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার কামরুল হাসান, অর্থ ও হিসাব শাখার উপপরিচালক শামসাদ ফখরুল, জনসংযোগ দপ্তরের উপপরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী, নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, উপাচার্যের পিএস মনিরুজ্জামানসহ প্রশাসনের শীর্ষ কোনো কর্মকর্তা তাদের দপ্তরে নেই।
জনসংযোগ দপ্তরের উপপরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গ্রুপ ছবি শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সামনে।’
কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ নির্বাচনে ভোট চাওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশিরভাগ সময় উপাচার্য হাফিজা খাতুন ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িসহ অন্যান্য সুবিধা ব্যবহার করে তিনি দলবলসহ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরা ক্যাম্পাসে উপস্থিত না থাকায় সকল কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া অভিভাবকহীন ক্যাম্পাসে একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। গত পরশু শরীরচর্চা দপ্তরের কর্মকর্তা শেখ শাহ জামাল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে নিজ দপ্তরে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তিনি লিখিত অভিযোগ দিলেও এ নিয়ে এখন কোনো তদন্ত কমিটি গঠিত হয়নি।
উপাচার্য ক্যাম্পাসে না থাকায় ফরম পূরণ, পরীক্ষার ফল প্রকাশ, সার্টিফিকেট উত্তোলনসহ সব কাজে শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। অর্থ ও হিসাব দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ভিসি ক্যাম্পাসে না থাকায় শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বর্তমান মাসের বেতন পর্যন্ত যথাসময়ে পাওয়া নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।’
ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ছাত্র শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দূর থেকে এসে গত এক সপ্তাহ ঘুরেও সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে পারছি না উপাচার্যের স্বাক্ষর না হওয়ার কারণে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার বিজন ব্রহ্ম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কাজ ঠিকঠাক মতো চলছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপপরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমি ঢাকায় আসছি ডায়েরির কাজে। আমার ছেলে ঢাকায় থাকে, তাকে ডাক্তার দেখাতে হবে। এ ছাড়া একেকজন একেক কাজে ঢাকায় আসছে। সব কাজ ঠিকমতোই চলছে।’
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য হাফিজা খাতুনকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি সহসভাপতি পদে নির্বাচন করছি। তবে প্রশাসনিক কাজকর্ম ঠিকই চলছে। এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে পরে কথা বলব।’