নির্বাচনী সহিংসতায় বাবার মৃত্যুতে বিলাপ করছেন মেয়ে মমতা ইসলাম। আজ রোববার সকালে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার টেঙ্গর এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি মুন্সিগঞ্জ: মুন্সিগঞ্জ-৩ (সদর এবং গজারিয়া) আসনে ভোটকেন্দ্রের পাশে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাসের এক সমর্থককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার টেঙ্গর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত মো. জিল্লুর রহমান মিরকাদিম পৌর শ্রমিক লীগের সহসভাপতি। মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়সালের সমর্থকেরা হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পরিবারের।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, ঘটনাটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে ঘটেছে। এটি অপ্রত্যাশিত ছিল। সেখানে অনেক ফোর্স (আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য) মোতায়েন রয়েছে। তারপরও কারা, কেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ সুপার বলেন, এই আসনের অন্য কেন্দ্রগুলোতে তেমন কোনো সমস্যা নেই। পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
হত্যাকাণ্ডের পর টেঙ্গর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঘটনাস্থলে পড়ে রয়েছে রক্ত। তাঁর পাশে বসে বিলাপ করছেন জিল্লুর রহমানের মেয়ে মমতা ইসলাম (মৌ)। তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য তাঁর বাবা আজ ভোরে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর শুনতে পান তাঁর বাবাকে কোপানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে এসে দেখেন বাবার লাশ পড়ে আছে। মৌমিতা অভিযোগ করেন, তাঁর বাবা নৌকার পক্ষে নির্বাচনে কাজ করছিলেন। এ কারণে শুরু থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর (কাঁচি) সমর্থকেরা হুমকি দিয়ে আসছিলেন। নির্বাচনের দিন এলাকায় না থাকার জন্যও হুমকি দেওয়া হয়েছিল। সেটি না মানায় আজ কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
১০০ গজের মধ্যে রিকাবিবাজার ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র। ২০০ গজ দূরে রিকাবিবাজার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র। সহিংসতার ঘটনাটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে হওয়ায় ভোটগ্রহণে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক আবু জাফর রিপন।
উল্লেখ্য, মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাস। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক। তিনি দুবার এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ ফয়সাল কাঁচি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তাঁর বাবা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন। ফয়সাল দুবার মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ছিলেন।
প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আসনটিতে এ দুটি পক্ষের মধ্যে হামলা, সংঘর্ষ, গুলি, প্রচার ক্যাম্প ভাঙচুরের অন্তত ১৮টি ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২দিকে সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মুন্সিকান্দি গ্রামে নৌকার প্রার্থীর এক সমর্থককে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে।