বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান | ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকের ওপর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলার মামলার প্রধান আসামি ও সোনাতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ছয় আসামিকে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এর ১৪ ঘণ্টা পরই তাঁরা জামিনে মুক্তি পান।

সোমবার রাত সোয়া ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম এলাকা সায়দাবাদ থেকে র‌্যাব-১২–এর সদস্যরা তাঁদের গ্রেপ্তার করেন।

সোনাতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বগুড়া-১ আসনে নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নানের ছোট ভাই। গ্রেপ্তার অন্য আসামিরাও নৌকার কর্মী। তাঁরা হলেন সোনাতলা উপজেলার পশ্চিম শিচারপাড়ার মো. লিমন (৩২), জোড়গাছা এলাকার মো. রায়হান (২৮),  মো. রানা (২৬),  মো. রাজন (৩৫) এবং নিপুণ (২৮)।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১২ বগুড়ার ক্রাইম প্রিভেনশন স্পেশালাইজড কোম্পানির অধিনায়ক মীর মনির হোসেন বলেন, মিনহাদুজ্জামান বগুড়া থেকে ঢাকায় পালিয়ে যাচ্ছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রাত সোয়া ১২টার দিকে গাড়ি তল্লাশি চালিয়ে তাকেসহ মামলার ছয় আসামিকে সিরাজগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার বগুড়ার সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এ হাজির করে জামিন আবেদন করেন তাঁরা। শুনানি শেষে বিচারক জিনিয়া জাহান বেলা আড়াইটার দিকে মিনহাদুজ্জামানসহ ৬ আসামির জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। বগুড়া আদালতের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন জামিন মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়া-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্য কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান। তাঁর প্রচারণা শেষে গত গত রোববার রাতে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁর সমর্থক রেজওয়ানুল হক। পথে সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের ভেলুরপাড়া চারমাথা মোড় এলাকায় নৌকার সমর্থকেরা রেজওয়ানুল হকের ওপর হামলা করে। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন।

এ ঘটনায় রেজওয়ানুলের স্ত্রী নাহিদ নাসরিন বাদী হয়ে সোনাতলা থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন। মামলার ২ নম্বর আসামি ও জোড়গাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন। তাঁকে গতকাল ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই নৌকার প্রার্থীর লোকজন ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তাঁর কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছে। সর্বশেষ রোববার রেজওয়ানুলের ওপর হামলা হয়। তাঁর অবস্থা ভালো নয়। ভোটার ও কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখানোর বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাকেও জানানো হয়েছে। তাঁরা আশ্বস্ত করলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেই।